Logo
Logo
×

সারাদেশ

সমাবর্তন বর্জনের ঘোষণা রাবির সাবেক শিক্ষার্থীদের

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম

সমাবর্তন বর্জনের ঘোষণা রাবির সাবেক শিক্ষার্থীদের

অতিথি নির্বাচন ও সময় নির্ধারণে শিক্ষার্থীদের মতামত বিবেচনায় না নেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০, ৬১ ও ৬২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীদের একাংশ। 

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের তারা এ ঘোষণা দেন। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া পুনরায় উন্মুক্ত করার দাবি জানানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো সাড়া দেয়নি বলেও অভিযোগ সাবেক শিক্ষার্থীদের। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ২০১৩–১৪ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ২০১২–১৩ শিক্ষাবর্ষের রাসেল কবির এবং ২০১৩–১৪ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ আলী।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুই দফা সময় পরিবর্তনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৭ ডিসেম্বর সমাবর্তনের নতুন তারিখ ঘোষণা করে। এতে সভাপতি হিসাবে শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা সিআর আবরারকে এবং অতিথি হিসেবে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এএসএম ফায়েজকে রাখার কথা জানানো হয়। অতিথিদের নাম ঘোষণার পর থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকে। ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ ও ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামে ফেসবুক গ্রুপে অনেকেই সমাবর্তন বর্জনের ঘোষণা দেন। 

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২০২৩ সালের নভেম্বরে সমাবর্তন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি দীর্ঘদিন বিলম্বের পর এখন জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে আয়োজন করা হচ্ছে। গত ৩০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ইমেইলে স্মারকলিপি পাঠিয়ে অতিথি নির্বাচন ও সময় পুনর্বিবেচনা এবং রেজিস্ট্রেশন পুনরায় উন্মুক্ত করার আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানায়নি।

তিনি বলেন, অতিথিদের ব্যক্তিগতভাবে অসম্মান করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম, ঐতিহ্য ও মর্যাদার জায়গা থেকে আমরা অতিথি নির্বাচনে অসন্তোষ প্রকাশ করছি। 

সাবেক এই শিক্ষার্থী বলেন, নির্বাচনের আগে অতিথিদের পাওয়া সম্ভব না হলে নির্বাচিত সরকারের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানকে সমাবর্তনে অতিথি করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আমরা জানতে চাই, সমাবর্তনের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া ফি কোন ব্যাংকে জমা ছিল, সেখান থেকে কত লভ্যাংশ পাওয়া গেছে এবং পুরো বাজেট কীভাবে ব্যয় করা হচ্ছে—এসব তথ্য স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করতে হবে।

ডিসেম্বরের ব্যস্ত কর্মপরিবেশ বিবেচনায় অনুষ্ঠানের সময় পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়ে সাবেক এই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া থেকে অনেক শিক্ষার্থী বাদ পড়েছেন। তাদের পুনরায় রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

প্রধান উপদেষ্টার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সমাবর্তনে উপস্থিত থাকবেন। তিনি পৃথিবীর বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে উপস্থিত থেকেছেন এবং শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা হয়ে থেকেছেন। কিন্তু রাবির মতো বড় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে তাকে পাচ্ছি না—এতে আমরা হতাশ হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই সমাবর্তন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি প্রশাসন আমাদের উপেক্ষা করে সমাবর্তন আয়োজন করতে যায়, তবে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায়ভার সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনের ওপর বর্তাবে। অতিথিদের সঙ্গে কোনো অসম্মানজনক পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায়ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।

তবে যথাযথ সময়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমাবর্তনে আচার্য বা সরকারপ্রধান উপস্থিত থাকেন এমন নয়। এ বছরের সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি শিক্ষা উপদেষ্টাকে মনোনীত করেছেন। অতিথিদের আমন্ত্রণ, ক্যাম্পাস সৌন্দর্যবর্ধন ও ভেন্যু প্রস্তুতির কাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে। এখন এ নিয়ে পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। 

তিনি জানান, নির্ধারিত সময়েই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার