শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে, পরীক্ষা নিচ্ছেন অভিভাবকরা
জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম
দেশব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে মেহেরপুরের ৩০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও চলছে সহকারী শিক্ষকদের শাটডাইন কর্মসূচি। এ অবস্থায় অধিকাংশ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র বিতরণ থেকে শুরু করে খাতা সংগ্রহ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে অভিভাবকদের।
কোথাও কোথাও অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসে পরীক্ষা বন্ধ করার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সঠিক মূল্যায়ন বিঘ্নিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও ভোগান্তি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল। অভিভাবকদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, কর্মবিরতির কারণে কোনো শিক্ষকই পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করছেন না। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়ে মাঠে নেমেছেন স্থানীয় অভিভাবকরা।
গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রুবেল হোসেন বলেন, শিক্ষকদের কর্মবিরতির ঘোষণা শোনার পর থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আহ্বানে অভিভাবকরাই পরীক্ষার খাতা বিতরণ, প্রশ্ন দেওয়া থেকে শুরু করে কক্ষ তদারকি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিভাবক সুমি খাতুন বলেন, আমি পরীক্ষার হলে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। বাচ্চারা সারা বছর যে পরিশ্রম করে তার মূল্যায়ন হয় এই পরীক্ষায়। শিক্ষকদের এমন আন্দোলনে আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা নিজেদেরই দায়িত্ব পালন করছি।
আরেক অভিভাবক শহিদুল বলেন, “শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, কিন্তু সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা জিম্মি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আন্দোলন তারা করুক, কিন্তু বার্ষিক পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সময়মতো নিতে পারতো।”
গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভেজ সাজ্জাদ রাজা বলেন, গতকাল পরীক্ষা নিতে পারিনি। আজ উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিও) স্যার এসে বলেছেন যে কোনোভাবে পরীক্ষা নিতে হবে। শিক্ষকরা সহযোগিতা না করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও অভিভাবকদের সহায়তায় পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এস এম জয়নুল ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা নিচ্ছেন না। তাই প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুত পরিস্থিতির সমাধান হবে।