বিকেএসপিতে যাচ্ছে চাঁদপুরের খুদে ‘মেসি’ সোহান
জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩১ এএম
এবার সত্যিই স্বপ্নের পথে পা বাড়াচ্ছে চাঁদপুরের খুদে ‘মেসি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সোহান। ৬ বছর বয়সি এই ফুটবল প্রতিভা রাত পোহালেই জাতীয় ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ছুটে যাবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি।
বলের ওপর সোহানের নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব ভালো। ড্রিবলিংয়ে পারদর্শী। তার চেয়ে বড়দের কাটিয়ে বোকা বানাতে পারে। এই করেই কয়েক মাস আগে আলোচনায় আসে। তার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ালে দেশবাসী তার নৈপুণ্যে মুগ্ধ হন, অনেকে তাকে আখ্যা দেন খুদে ‘মেসি’। সোহান চোখে পড়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার। ক্রীড়া উপদেষ্টা তাকে বিকেএসপিতে স্কলারশিপ দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরও আগে ভাইরাল হওয়ার পর সোহানের সার্বিক সহযোগিতার দায়িত্ব নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মতলব উত্তর উপজেলার সাড়ে পাঁচআনি নামে এক সাধারণ গ্রাম থেকে উঠে আসা ৬ বছরের এই প্রতিভা এখন দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে যাচ্ছে। ইউনিয়ন, উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও দেশের মানুষের ভালোবাসা; সব মিলিয়ে সোহানের জীবন যাত্রায় এ এক নতুন অধ্যায়ের শুরু। সবাই আশা করছেন একদিন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেশের পতাকা উঁচু করে ধরবে মতলবের এই ক্ষুদে ‘মেসি’।
সোহানের চোখেও এখন বড় স্বপ্ন। সে হাসিমুখে বলেছে, আমি বড় হয়ে মেসির মতো খেলোয়াড় হতে চাই। দেশের হয়ে খেলব, গোল করব। তার মুখের সেই আত্মবিশ্বাসই যেন বলে দেয় সামনে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে মতলবের এই ক্ষুদে ফুটবলারের সামনে।
সোহানের বাবা সোহেল প্রধানিয়া বলেন, আমার ছেলে ছোট থেকেই ফুটবল ভালোবাসে। মানুষের ভালোবাসা আর নেতাদের সহযোগিতা আজ তাকে বিকেএসপির দরজায় পৌঁছে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় যাচ্ছি ভর্তি কাজের জন্য। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, সোহান যেন দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। সোহানের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তারেক রহমানসহ সবাইকে ধন্যবাদ। ক্রীড়া উপদেষ্টা তাকে ডাকলেন, উপহার দিলেন, বিকেএসপি সুযোগ করে দিলেন এটা আমাদের জীবনের বড় প্রাপ্তি।
মতলব উত্তর স্পোর্টস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. শামিম খান এবং ক্রীড়া সংগঠক শামসুজ্জামান ডলার বলেন, সোহান আমাদের এলাকার একটি রত্ন। ফুটবলে তার যে প্রতিভা দেখা গেছে, তা বিশ্ব ফুটবলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিতে পারে। এখন পড়াশোনার পাশাপাশি বিকেএসপিতে সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলবে এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। তারপরও আমরা সবসময় সোহানের পাশে থাকব।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, সোহান আমাদের উপজেলার একটি বিরল প্রতিভা। তার বয়স কম, কিন্তু ফুটবলে তার অসাধারণ দক্ষতা সবাইকে অবাক করেছে। বিকেএসপিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া সোহান ও তার পরিবারের জন্য যেমন আনন্দের, তেমনি আমাদের উপজেলা ক্রীড়া সংস্থারও বড় অর্জন। আগামীকাল সে ঢাকায় যাচ্ছে আমরা তার পাশে আছি এবং থাকব।