সার বিতরণে বিশৃঙ্খলা: কৃষি কর্মকর্তাকে পেটাল জনতা
জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
ডিলারদের কাছে সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকা এবং বিতরণে চরম বিশৃঙ্খলার জেরে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ঘটেছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সামনেই মারধরের স্বীকার হয়েছেন এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকালে সার বিতরণের সময় এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে রাণীশংকৈল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চলতি রবি মৌসুমে গম, ভুট্টা ও সরিষার চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাণীশংকৈলের কৃষকেরা। কিন্তু বাজারে চাহিদামতো সার না থাকায় কৃষকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এই পরিস্থিতিতে উমরাডাঙ্গী বাজারে মল্লিক ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মোজাম্মেল হোসেন কৃষকদের মাঝে সার বিতরণ শুরু করলে সেখানে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সার বিতরণের একপর্যায়ে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে যখন পাঁচটি ভ্যানে করে পাঁচজন কৃষক একজনের নামেই ৩৩ বস্তা সার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে লাইনে থাকা অন্য কৃষকেরা সার না পাওয়ার আশঙ্কায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে হট্টগোল শুরু হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকতার হোসেন একপর্যায়ে ‘দুপুরের খাবারের কথা’ বলে বিতরণস্থল ত্যাগ করেন। এরপর গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুর রশিদ মামুন ঘটনাস্থলে আসেন এবং উপস্থিত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। একইসাথে তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সইদুল ইসলামকে সেখানে আসার অনুরোধ জানান।
কৃষি কর্মকর্তা সইদুল ইসলাম উপ-সহকারী কর্মকর্তা আকতার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে বিতরণস্থলে ফিরে এলেই ঘটে মূল ঘটনা। উত্তেজিত জনতা তাৎক্ষণিকভাবে আকতার হোসেনকে বেধড়ক মারধর করে।
আহত আকতার হোসেনকে দ্রুত উদ্ধার করে রাণীশংকৈল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে দ্রুত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সইদুল ইসলাম ঘটনার তীব্রতা স্বীকার করে বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো নয়। মাথায় আঘাত পেয়েছে, দাঁত ভেঙে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দিনাজপুরে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা শেষে ভুক্তভোগীর মতামতের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর থেকে মল্লিক ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী কিংবা প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিস থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।