৬ ভারতীয় নাগরিকের জামিন, ২ ঘণ্টা পর আবার পুলিশি হেফাজতে
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১২ এএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের পুশইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করা অন্তঃসত্ত্বা নারী সোনালী খাতুনসহ ৬ ভারতীয় নাগরিককে জামিন দিয়েছেন আদালত। তবে কারাগার থেকে মুক্তির মাত্র দুই ঘণ্টা পরই আবার তাদেরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াগোলা এলাকা থেকে পুলিশের একটি দল তাদের হেফাজতে নেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ।
এর আগে সোমবার বিকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল ইসলাম চার ভারতীয় নাগরিকের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে সঙ্গে থাকা দুই শিশুকে মামলার আসামি করা হয়নি। দাফতরিক প্রক্রিয়া শেষে ওই দিন রাত ৮টার দিকে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান। আগামী ৩ ডিসেম্বর মামলার শুনানির দিন নির্ধারিত রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, ‘জামিনের পর আপাতত পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াগোলার বাসিন্দা ফারুক হোসেনের জিম্মায় জামিন পান ছয় ভারতীয় নাগরিক। ফারুক হোসেন জানান, কারামুক্তির পর তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে তার বাড়িতে আসেন। রাতের খাবার শেষ হওয়ার পরপরই পুলিশের একটি দল তাদের নিয়ে যায়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী একরামুল হক পিন্টু বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন যে কোনো সময় সন্তান জন্ম দিতে পারেন। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাকে এবং আরও তিনজনকে জামিন দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ফারুক হোসেন সোনালী বিবির আত্মীয় এবং তিনিই জিম্মাদার হয়েছেন। ৩ ডিসেম্বর আদালতে আসামিদের হাজির হওয়ার নির্দেশ রয়েছে।
গত ২০ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর এলাকা থেকে ওই ৬ ভারতীয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা কুড়িগ্রামের একটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন হন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সীমান্তে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে শিশু দুজনকে মামলায় আসামি করা হয়নি।
গ্রেফতার ভারতীয় নাগরিকরা হলেন: পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার পাকুরের দানিশ শেখ (২৮), তার স্ত্রী সোনালী বিবি (২৬), তাদের সন্তান সাব্বির শেখ (৮), সুইটি বিবি (৩৩) ও তার দুই সন্তান মো. কুরবান দেওয়ান (১৬) এবং মো. ইমাম দেওয়ান (৬)।
ঘটনাটি ভারতের গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং দেশটিতে আলোচনার সৃষ্টি করে। পরে গ্রেফতার ব্যক্তিদের পরিবার আদালতে মামলা করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট ৬ ভারতীয় নাগরিককে ফেরাতে চার সপ্তাহ সময় বেঁধে দেয়।
জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বাসিন্দা এসব নাগরিক দিল্লীতে কাগজ কুড়ানোর কাজ করতেন। পরে দিল্লী পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুশইন করে।