পালিয়ে বিয়ের এক মাসের মাথায় লাশ হলেন শম্পা
জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম
বগুড়ায় প্রেমের সম্পর্কে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে বিয়ের এক মাস না পেরোতেই যৌতুকের জন্য আরিফা আকতার শম্পা (১৯) নামে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে মরদেহের গলায় গামছা পেঁচিয়ে গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
রোববার সন্ধ্যায় শহরের নারুলী কৈপাড়ায় এ ঘটনার পর স্বজনরা স্বামী রিয়াজুল জান্নাত নাফিজকে (২০) আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।
স্বজনরা জানান, আরিফা আকতার শম্পা বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের পোড়াপাড়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের মেয়ে। প্রেমের সম্পর্কে প্রায় এক মাস আগে শম্পা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে গাবতলীর হরারদীঘি গ্রামের জাহিদুল হকের ছেলে রিয়াজুল জান্নাত নাফিজকে (২০) বিয়ে করেন। এরপর তারা শহরের নারুলী কৈপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই নাফিজের আসল রূপ প্রকাশ পায়।
শ্বশুরের কাছে একটি দামি মোটরসাইকেল (আরওয়ান ফাইভ) ও ছয় লাখ টাকা এনে দিতে শম্পার ওপার শারীরিক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করেন। যৌতুক না পেয়ে নাফিজ ভালোবেসে বিয়ে করা শম্পাকে মারধর করতে থাকেন। ধারাবাহিক নির্যাতনের একপর্যায়ে নাফিজ রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শম্পাকে হত্যা করেন। এরপর এ হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে মরদেহের গলায় গামছা পেঁচিয়ে জানালার গ্রিলের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
মৃত আরিফা আকতার শম্পার চাচা দাবি করেন, হত্যার ২০ মিনিট আগে তিনি (শম্পা) বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছিলেন, স্বামী তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন; তিনি বাঁচার আকুতি জানান। এরপর তারা কৈপাড়ার ওই ভাড়া বাসায় গিয়ে শম্পার মরদেহ দেখতে পান। স্বজনদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে বাসার জানালার সঙ্গে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় শম্পার মরদেহ দেখতে পান। পরে এলাকাবাসী শম্পাকে হত্যার অভিযোগ স্বামী রিয়াজুল জান্নাত নাফিজকে আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এলে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সুরতহাল শেষে শম্পার মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এছাড়া স্বামী নাফিজকে আটক করে সদর থানায় নিয়ে যায়।
নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাসুদ করিম জানান, শম্পার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসী তার মরদেহ ঘরের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া দেখতে পান। গলায় দাগ থাকায় প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। এরপরও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এটি আত্মহত্যা না হত্যা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
সোমবার দুপুরে বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাহফুজ আলম জানান, জিডিমূলে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত নাফিজকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে হত্যা মামলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।