জিএসের সঙ্গে বাজে আচরণ, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চাইল রাকসু
জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৬ পিএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বিরুদ্ধে ঐদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতার অভিযোগে তদন্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের দাবি করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)। আজ সোমবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান রাকসুর প্রতিনিধিরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ঘটনা নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
গতকাল রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের রেজিস্ট্রারের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। রাজশাহী মহানগর এনসিপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সভা করছিলেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম। পরে সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সভা করছেন অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন সালাহউদ্দিন আম্মার। সেখানে তারা একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তিনি বলেন, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগে ২৩ দিন যাবত ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে অচলাবস্থা অতিক্রম করেছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকট নিরসনে রাকসুর প্রতিনিধিদল উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুত সমাধানের অনুরোধ জানায়। উপাচার্য বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে গত বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অপসারণের নির্দেশে স্বাক্ষর করেন এবং ফাইলটি রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রেরণ করেন। প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী, রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একই দিনে চিঠি ইস্যু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত রেজিস্ট্রার দপ্তর সেই চিঠি ইস্যু করেনি। এতে বিভাগটির ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থেকে শিক্ষার্থীরা আরও একদিন একাডেমিক ক্ষতির মুখে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে জানতে রাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) ও সিনেট সদস্য সালাহউদ্দিন আম্মার রেজিস্ট্রার দপ্তরে উপস্থিত হয়। পরে দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানায় যে, রেজিস্ট্রার তখন রাজনৈতিক প্রোগ্রামে ব্যস্ত আছেন এবং পরে আসতে বলেছেন। প্রশাসনিক দায়িত্বের সময় রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যেমন নীতিগতভাবে অনুচিত, তেমনি এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশাসনের পরিপন্থী। পরে রেজিস্ট্রার মহোদয়ের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে বিষয়টির অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং উত্তেজিত হয়ে কথা বলেন।
এ ঘটনায় রাকসুর অবস্থান তুলে ধরে ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সংকটকে উপেক্ষা করে প্রশাসনিক পদক্ষেপ বিলম্বিত করা দায়িত্বহীনতা ও জবাবদিহিতার অভাবের দৃষ্টান্ত। একজন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধির সঙ্গে এমন আচরণ রাকসুর মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করেছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নীতিমালার পরিপন্থী। রাকসুর দাবি– ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আলম মাসউদের এই অশোভন আচরণের তদন্ত করে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে রাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘একজন শিক্ষক তার দায়িত্ব ভুলে চেম্বারে রাজনৈতিক আলোচনা করছিলেন। এই জায়গায় শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান না করে রাজনৈতিক আলাপ করার কোনো অধিকার নেই। রাকসুর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তার আচরণ ছিল বিমাতাসুলভ।’