ভুল অপারেশনে নববধূর মৃত্যু, অপহরণ মামলায় স্বামী গ্রেফতার

জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩০ পিএম

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের পর এক নববধূর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
মারা যাওয়া নববধূ শামসুন নাহার নাদিয়া (১৭) নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া এলাকার সামসুদ্দিন হোসেনের মেয়ে। ঘটনার পর নাদিয়ার শ্বশুরপক্ষের লোকজন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলেছেন।
মাস দেড়েক আগে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে নাদিয়া পালিয়ে এসে আলমডাঙ্গার মাজু গ্রামের লাল্টুর ছেলে শিহাবের (২২) সঙ্গে বিয়ে করেন। শিহাব পেশায় টাইলস শ্রমিক। তার বিরুদ্ধে ঢাকার দারুস সালাম থানায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর অপহরণ মামলা করেন নাদিয়ার মা নাছরিন বেগম।
নাদিয়ার মৃত্যুর পর পুলিশ শিহাবকে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার করেছে।
শিহাবের পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে নববধূ নাদিয়ার পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এরপরই তাকে আলমডাঙ্গার নূর মোহাম্মদ ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরীক্ষায় অ্যাপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত করা হয়। রাত ৮টার দিকে নাদিয়াকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ডা. হোসেন ইমাম অপারেশন করে কুষ্টিয়ায় চলে যান। এরপর ক্লিনিকে নাদিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে দ্রুত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে শনিবার নাদিয়ার মৃত্যু হয়।
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানান, অপারেশনের সময় রোগী আকস্মিকভাবে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাকে দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে সেখানে তিনি মারা যান।
শিহাবের পিতা লাল্টু রহমান জানান, অপারেশন করে ডা. হোসেন ইমাম কুষ্টিয়ায় চলে যাওয়ার পর রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর তড়িঘড়ি করে কুষ্টিয়ায় রেফার করে ক্লিনিক মালিক।
তিনি দাবি করেন, ভুল চিকিৎসায় নাদিয়া মারা গেছে। এ ব্যাপারে ডা. হোসেন ইমামকে কল দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর এটা রং নাম্বার বলে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এদিকে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে করায় নাদিয়ার বাবা সামসুদ্দিন কিছুদিন আগে ঢাকার দারুস সালাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শিহাবের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছিলেন। মেয়ের মৃত্যুর পর ওই মামলায় শনিবার রাতে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ শিহাবকে গ্রেফতার করে।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান বলেন, রোববার নাদিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে তার পিতা-মাতার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আর অপহরণ মামলার আসামি হিসেবে মৃত নাদিয়ার স্বামী শিহাবকে ঢাকার দারুস সালাম থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই থানায় দায়ের করা অপহরণ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।