Logo
Logo
×

সারাদেশ

তুচ্ছ ঘটনায় টর্চ লাইট জ্বালিয়ে ৯ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ

Icon

জাগো বাংলা ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১২ এএম

তুচ্ছ ঘটনায় টর্চ লাইট জ্বালিয়ে ৯ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইমামবাড়ি বাজারে ২৫০ গ্রাম কার্টনসহ এক কেজি মিষ্টি ওজন করা নিয়ে রাতের আঁধারে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে ৯ গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মামা-ভাগ্নেকে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আজ রোববার ইমামবাড়ি বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য প্রশাসনের পক্ষে থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ১০ অক্টোবর বানিয়াচং উপজেলার সন্দলপুর গ্রামের রঙ্গিলা মিয়ার ছেলে আমির উদ্দিনের ইমামবাড়ি বাজারের ‘ভাই ভাই হোটেল’ থেকে টুকচানপুর গ্রামের নইজ্জা মিয়ার ছেলে সাদমান আহমেদ ইমন ২৫০ টাকা দিয়ে ১ কেজি মিষ্টি কিনে নেন। মিষ্টি কার্টনসহ ওজন দেয়া হয়। পরে ইমন কার্টন ছাড়া ওজন দিয়ে ৭৫০ গ্রাম মিষ্টি পান। আর কার্টনের ওজন ২৫০ গ্রাম। অর্থাৎ কার্টনের দাম পড়েছে প্রায় ৬২ টাকা। বিষয়টি নিয়ে ইমন ফেসবুকে পোস্ট দেন। এ নিয়ে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে লেখালেখি চলতে থাকে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে ইমামবাড়ি বাজারে পেয়ে সাদমান আহমেদ ইমনকে বেধরক মারধর করে আমির উদ্দিন। এ নিয়ে উভয় পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ইমামবাড়ি বাজারে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে সন্দলপুর গ্রামের পক্ষে শ্রীমতপুর, লহরজপুর, তাজপুর ও হরিপুর গ্রামের লোকজন অপরদিকে টুকচানপুর গ্রামের পক্ষে দেবপাড়া, কালিয়ারভাঙ্গা ও পাথারিয়া গ্রামের লোকজন অংশ নেয়। এ সময় ইমামবাড়ি বাজারে বিদ্যুৎ না থাকায় রাতের অন্ধকারে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বাজার জুড়ে টর্চের আলো আর চিৎকারে আতঙ্কে কেঁপে উঠেছিল ইমামবা বাজার এলাকা। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং থানা পুলিশ এসে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।

আহতরা হলোন— সুজন মিয়া, রায়হান মিয়া, রুহাদ মিয়া, শকিল মিয়া, দিলারা বেগম, রিয়াদ, রহমত আলী, রবি মিয়া, ইজানুর রহমান, মুহিবুর রহমান, আজিজুল, মিজান মিয়া, এরশাদ মিয়া, জাহাঙ্গীর, কামাল মিয়া, পাভেল, গউছ, সাদমান আহমেদ ইমন। এর মধ্যে সাদমান আহমেদ ইমন ও তার ভাগ্নেকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এদিকে, খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী ও সেনাবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেছি। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ইমামবাড়ি বাজারের সব দোকানপাট রোববার সারাদিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকালেই মাইকিং করে বিষয়টি সবাইকে জানানো হবে।’

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার