৮০ প্রকার চা বিক্রি করেন জোবায়ের, আয়ের ৩০ ভাগ দেন দরিদ্রদের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৮ পিএম

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ৮০ প্রকার চা বিক্রি করে শিক্ষিত জোবায়ের এখন স্বাবলম্বী। চা বিক্রি করে মাসে আয় করেন লাখ টাকা। আয়ের শতকরা ৩০ ভাগ টাকা খরচ করেন অসহায় দরিদ্রদের পেছনে।
প্রতি শুক্রবার তার দোকানে এবং বাড়িতে অসহায়-দরিদ্রদের মাঝে দুপুরের খাবার বিতরণ করেন।
জোবায়েরের চায়ের দোকানটি ভাঙ্গা উপজেলার বিশ্বরোড চৌরাস্তা এক্সপ্রেসওয়ে এবং ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার সামনে। সকাল ১০টা থেকে শুরু করে রাত ৩টা পর্যন্ত জোবায়েরের দোকানে ভিড় লেগে যায়।
চা পানকারী হাচান আমিন ও জাকির মুন্সি বলেন, খুবই সুস্বাদু চা, বন্ধুদের নিয়ে গ্রামগঞ্জে থেকে চা পান করতে ছুটে আসি। ৮০ পদের চা ও ৪০ ধরনের পান পাওয়া যায়। জোবায়ের ভাইয়ের চায়ের দোকানে সব সময় ভিড় লেগে থাকে।
চা বিক্রেতা জোবায়ের বলেন, আমি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে চাকরি করতাম। মহামারি করোনার সময় আমার চাকরিটা চলে যায়। এরপর আমি হতাশায় ভুগতে থাকি। ছোট থাকতে বাবা মারা যাওয়ার আরও ছোট ২টি ভাইকে খরচ জোগাতে হয়। তারপরও আমি বড় ছেলে হিসেবে সংসারের ঘানি আমার কাঁদে উঠে পড়ে। এরপর চিন্তা করে ভাঙ্গা বাজার চৌরাস্তা মোড়ে একটি চায়ের দোকান দেই। কিছুদিন পর সরকার উন্নয়ন কাজের জন্য আমার দোকানসহ সব দোকানপাট ভেঙে দেয়। আমি আরও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি কিন্তু ভেঙে পড়িনি।
তিনি বলেন, এরপর গত ৬ মাস আগে ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে জোবায়ের তান্দুরী চা নামের একটি চায়ের দোকান দেই। এখন আমার চায়ের দোকানে বিভিন্ন প্রকারের ৮০ রকমের চা পাওয়া যায় এবং ৪০ প্রকার সুস্বাদু পান পাওয়া যায়। একটা ব্যতিক্রম চায়ের দোকানে এত আইটেম চা পাওয়াতে গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকার লোক চা খেতে আমার দোকানে ভিড় করেন। আমি চায়ের দোকান করে মাসে আয় করি লাখ টাকা।
জোবায়ের বলেন, আমার ইনকামের ৩০ পার্সেন্ট টাকা আমি হতদরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেই। আমার দোকানে ক্রেতার মধ্যে যারা আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চা ফ্রি করে দিয়েছি।
জুবায়ের সব যুবকদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, ১০-২০ লাখ টাকা খরচ করে প্রবাসে না গিয়ে বাড়িতে বসে ব্যবসা করি। মাসে লাখ টাকা ইনকাম করি। আমি একজন গ্র্যাজুয়েট ছেলে হিসেবে মাসে এক লাখ টাকা ইনকাম করলেও আপনারা কেন পারবেন না। মনে সাহস থাকুন, এগিয়ে চলুন, আপনারাও পারবেন।