Logo
Logo
×

সারাদেশ

উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মির্জা ফখরুল

Icon

জাগো বাংলা ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৫৮ এএম

উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মির্জা ফখরুল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে কেউ কেউ, কোনো কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে। আমরা এটা শুনতে চাই না, বাংলাদেশের মানুষ এটা শুনতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা চায় এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।

শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির প্রয়াত নেতা হান্নান শাহের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেছেন, এক বছর আগে একটি দানবীয় সরকারকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি সরকার গঠন করা হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন ভালো মানুষ। তিনি ছয়টি সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে দেশের নানা ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন এবং অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনকে ঘিরে একটি মহল ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিএনপিকে সংস্কার বিরোধী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। চতুর্দিক থেকে বিএনপিকে ঘায়েল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশ এখন নির্বাচনের রাস্তায় উঠে গেছে, তা চালিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। 

তিনি বলেন, এ সরকারের নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই। বরং বিএনপিই এসব সংস্কারের ধারক ও বাহক। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় সরকারের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। স্বাধীন গণমাধ্যম চালু করেছেন, এ দেশের নারীদের চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছেন, সংবিধানে বিসমিল্লাহ চালু করা এবং আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থার বিষয়টি সংযোজন করেছেন। আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবৈতনিক নারী শিক্ষা চালু করেছেন। সর্বশেষ তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার সঙ্গে বর্তমান সরকার ঘোষিত সংস্কার কর্মসূচির কোনো বিরোধ নেই। অথচ একটি মহল বিএনপিকে সংস্কার বিরোধী হিসেবে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। ভারত আমাদের সঙ্গে সব সময় শত্রুতা করে আসছে। ভারতের সীমান্ত রক্ষীরা নির্বিচারে গুলি করে আমাদের দেশের মানুষকে হত্যা করছে। যা পৃথিবীর সভ্য কোনো দেশ করে না। তারা ফারাক্কার পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদের দেশের মানুষের জানমালের ক্ষতি করে। তাই তাদের সঙ্গে আমরা এমন বন্ধুত্ব চাই, যেখানে কোনো অবিচার থাকবে না এবং সম্পর্কটা হবে সমানে সমান।

তিনি বলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ.স.ম হান্নান শাহকে তিনি বিশেষভাবে শ্রদ্ধা করেন। কারণ তিনি ছিলেন একজন অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক, নির্ভীক সাহসী সৈনিক। তিনি বীরের বেশে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের আমলে একটি কুচক্রী মহল যখন দলের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তখন তিনি দলের পক্ষে ও দেশনেত্রীর পক্ষে নির্ভীক চিত্তে সাহসী বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি ব্যক্তি স্বার্থকে কখনো বড় করে না দেখে দলের ও দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখেছেন। তাই তার ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নানকে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে কাপাসিয়া বাসীর হাতে তুলে দিয়ে তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানাচ্ছি। 

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এবং কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও হান্নান শাহর ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ, কেন্দ্রীয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক ড. এম এ কাইয়ুম, সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, নির্বাহী সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, মজিবুর রহমান, গাজীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দীকি প্রমুখ। 

এর আগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপজেলার ঘাগটিয়ার গ্রামে হান্নান শাহর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় হান্নান শাহর রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার