পাথর ফেরত দিতে তোড়জোড়, ২৬ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার

জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০১:০২ এএম

প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার শেষ মুহূর্তে পাথর ফিরিয়ে দিতে ব্যবসায়ীদের তোড়জোড়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫টার মধ্যে সাদাপাথর মজুতকারীদের স্বেচ্ছায় নিজ খরচে পাথর ফেরত দিতে বলা হলেও নির্দিষ্ট সময় পরও অনেকেই ট্রাক ও ট্রাক্টর দিয়ে পাথর ফেরত দিতে দেখা গেছে।
এখনও অনেক ব্যবসায়ী পরিবহণের অভাবে পাথর ফেরত দিতে পারেননি। অন্যদিকে পাথর ফেরত দিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।
উপজেলা স্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতির নেতারা বলেন, উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৫০০ শতাধিক ক্রাশার মিল রয়েছে। তার মধ্যে অর্ধেকই সাদা পাথর ক্রয় করেছেন। আবার প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে ফেরতও দিয়েছেন।
তারা আরও বলেন, শ্রমিকরা সাদাপাথর চুরি করে এনে ধলাই নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছেন। সেই ব্যবসায়ীরা আমাদের বিভিন্ন ক্রাশার মিলে বিক্রি করেছেন। আমরা ন্যায্যমূল্যে পাথর কিনেছি। এখন ফেরত দেওয়ার ফলে আমাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে আলটিমেটামের শেষমুহূর্তে সাদাপাথর ফেরত দেওয়ার কর্মযজ্ঞ ঘুরে দেখেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ পর্যন্ত মোট ২৬ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার হয়েছে। তিন দিনের সময়সীমার মধ্যে সাড়ে ৬ লাখ ঘনফুট পাথর স্বেচ্ছায় জমা দিয়েছেন। সাড়ে ১৯ লাখ ঘনফুট পাথর অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিস্থাপন করা হয়েছে ১১ লাখ ঘনফুট পাথর। এক সপ্তাহের মধ্যে উদ্ধারকৃত সব পাথর পুনঃস্থাপন করা হবে। পুনঃস্থাপন কাজ শেষ হলে সাদাপাথরের সৌন্দর্য অনেকটা ফিরে আসবে।
কী পরিমাণ পাথর লুট হয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমার ধারণা অন্তত ৩০ শতাংশ লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। যেগুলো ভেঙে ফেলা বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা লুট করেছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে। তবে নিরীহ ও নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। যারা এখনো জমা দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান চালানো হবে।
এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়কসহ সদস্যরা সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র ও রোপওয়ে বাঙ্কার এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তদন্ত দলের সদস্য সচিব সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব)সহ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবরা প্রতিনিধি হিসেবে সঙ্গে ছিলেন।
এ কমিটি ২০ আগস্ট গঠন করা হয় এবং তাদের ১০ কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভিন নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা দুইদিন সিলেটে অবস্থান করে তদন্ত করবেন বলে জানা গেছে। তদন্ত দল স্থানীয় ব্যবসায়ী, স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বললেও পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।