
ঝালকাঠিতে সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম খান ফারসুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৫ সালে বিএনপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিলের সময় ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ফারসু এই মামলার ২৬ নম্বর আসামি।
মামলাটি করেন ঝালকাঠি জেলা মহিলা দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তা বেগম। মামলার বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে পৌঁছালে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল বোমা নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
মুক্তা বেগম অভিযোগ করেন, তিনি সে সময় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হামলার সময় তিনি পালানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তার চুলের মুঠি ধরে পেটে লাথি ও কিল-ঘুষি মারে। তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে আরও কয়েকজন মিলে তার পেট ও বুকে আঘাত করে এবং পদদলিত করে। এতে গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায় এবং তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকেন।
পরবর্তীতে কিছু প্রত্যক্ষদর্শী তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং সারমিন মৌসুমি কেকার নেতৃত্বে একটি দল গিয়ে জোর করে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেয়। এরপর আত্মীয়স্বজন তাকে গোপনে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেন। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, মারধরের কারণে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে।
মুক্তা বেগম আরও বলেন, ‘তৎকালীন স্বৈরশাসনের সময় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। তাই মামলা করতে পারিনি। এখন দেশে সুশাসন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসায় প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষীদের সহায়তায় আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে মামলা দায়ের করেছি।’
মামলা দায়েরের পর থেকেই শাহ আলম খান ফারসু পলাতক ছিলেন। অবশেষে রোববার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।