ডিসেম্বরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে পারে: ডা. তাহের

জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ০৮:২০ পিএম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আমরা মনে করি- ডিসেম্বরে স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে। এরপরে যে কয়েক মাস থাকবে সেই সময়ে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। আমরা শুরু থেকেই জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের প্রস্তাব করে আসছি।
শুক্রবার (২০ জুন) কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের হলরুমে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত নির্বাচনি দায়িত্বশীল সমাবেশ শেষে সাংবাদিদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, একটি দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে একটি রাষ্ট্রের প্রধানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সমীচীন হয়নি। এটা হতে পারে না। এখানে আমাদের আপত্তি ছিল। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে স্টেটমেন্ট দিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছি এবং দ্বিতীয় ধাপের যে আলোচনার কথা ছিল সেটা আমরা বয়কট করেছি।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা টেলিফোনে আমিরে জামায়াতের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আমিরে জামায়াতকে আশ্বস্ত করেছেন যে, আমরা বা আমি কোনোভাবে কোনো দলের প্রতি অনুরাগী নই। আমি পরিপূর্ণ একজন নিরপেক্ষ মানুষ। আপনারাও আমাদের পছন্দের মানুষ। আমাকে সময় দিন। আমি প্রমাণ করব যে আমি নিরপেক্ষ এবং একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য যা করা দরকার, আমি তাই করব। আপনারা আমাকে একটু সুযোগ দেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ডা. তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়েছে। সেখানে জামায়াত কিছু কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে আবার কিছু কিছু বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছে। সেগুলোকেও বুঝিয়ে যাতে ঐক্যমত করা যায় সে প্রচেষ্টা চলছে।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের অবস্থান জানালেন ডা. তাহের
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বর্তমান সময়ে যে নিয়ম রয়েছে তা হচ্ছে সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এটা নির্বাচিত হবে, আমরা বলেছি শুধু পার্লামেন্ট সদস্যদের মাধ্যমে নির্বাচিত হলে যারা মেজরিটি হয়ে সরকার গঠন করবে প্রেসিডেন্টরা তাদেরই হয়ে কাজ করবে। কারণ তাদের ভোট বেশি। এজন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে সিস্টেম সেটাকে আমরা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেছি। যেমন সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে একটা ইলেক্টোরাল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে। তাতে যে সুবিধা হবে, একজন উপযুক্ত, জাতীয়ভাবে সম্মানিত, দলকানা নহে এমন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী এই নীতিতে বিশ্বাস করে।
ডা. তাহের বলেন, আরেকটি বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, যে কোনো ব্যক্তি জীবনে দুবারের বেশি একাধারে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এ বিষয়ে বিএনপি ছাড়া অধিকাংশ দল একমত হয়েছেন; কিন্তু এটা এখনও ফাইনাল হয়নি। আগামী রোববারে এ প্রস্তাবের মধ্য দিয়েই আবার আলোচনা শুরুর কথা রয়েছে।
ডা. তাহের বলেন, আমরা একটি নতুন প্রস্তাব এনেছি তা হলো, সংবিধান সংশোধন, অনাস্থা বিল এবং বাজেট। এ তিন প্রস্তাবের বাইরে আর যেকোনো বিষয়ে একই দলের এমপি সে দলের মতের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারবেন। এ ব্যাপারেও আমরা সবাই একমত হতে পেরেছি।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এটিএম মাসুম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মরহুম মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমান, কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল মতিন, সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহীদ, পৌর জামায়াতের আমির ফেরদৌস আহমেদ, উপজেলা জামায়াতের অধ্যাপক রুহুল আমিন খান প্রমুখ।