ডেঙ্গু পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণা, ভুল রিপোর্টে বিপাকে রোগীরা

জাগো বাংলা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ০৬:০৩ পিএম

বরগুনায় বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি এখন ধারণ ক্ষমতার বাইরে। এরমধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুর প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করা মানহীন পরীক্ষা ও ভুল রিপোর্টে।
রোগী ও তার স্বজনরা বলছেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ক্লিনিকে গিয়ে তাদের টেস্ট করাতে হচ্ছে। আর এতে বাধছে বিপত্তি।
এমনই একজন রোগী মরিয়ম। তিনি বরগুনার খেজুরতলা এলাকার বাসিন্দা। ১৩ জুন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। ভর্তি হওয়ার সময় তার প্লাটিলেট ছিল ৬৭ হাজার। পরদিন স্থানীয় অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে টেস্ট করিয়ে রিপোর্টে দেখা যায় প্লাটিলেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার!
একদিনের ব্যবধানে এমন রিপোর্ট দেখে চক্ষু চড়কগাছ বরগুনা জেনারেলে হাসপাতালের চিকিৎসকের। পরে আরেকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট করালে রিপোর্টে প্লাটিলেট দেখা যায় ৫৪ হাজার। চিকিৎসকের সচেতনতায় ভুল রিপোর্টের কারণে অপচিকিৎসা থেকে রক্ষা পেলেও বিপাকে পড়তে হয় এই দরিদ্র নারীকে।
এর আগে ১১ জুন ১০ বছর বয়সী তানিয়া নামের এক শিশুকে একই ডায়াগনস্টিক থেকে ১৮ লাখ ৯৫ হাজার প্লাটিলেটের একটি রিপোর্ট দেওয়া হয়। এটিও ধরা পড়ে চিকিৎসকের চোখে, না হলে হয়তো অপচিকিৎসার শিকার হতে হতো ওই শিশুকেও।
রোগীদের অভিযোগ, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুর প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালু না থাকায় বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের নেই সঠিক ল্যাব, নেই প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান। ফলে ভুল রিপোর্টের হার বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে।
এ বিষয়ে কথা হয় ভুক্তভোগী মরিয়মের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাসপাতালে সিবিসি টেস্ট হয় না, তাই বাইরে থেকে টেস্ট করতে হয়। আমি ‘অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সিবিসি টেস্ট করিয়েছি। সেখান থেকে রিপোর্ট এনে হাসপাতালে দেখানোর পর ডাক্তার বলছে- এই রিপোর্ট ভুল, আপনি অন্য জায়গায় টেস্ট করান। পরে অন্য ডায়াগনস্টিক থেকে রিপোর্ট আসার পর আমাকে ডাক্তার চিকিৎসা দিয়েছেন।
টেস্টে ভুল রিপোর্ট নিয়ে জাকির হোসেন নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে টেস্ট করার ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকে গিয়ে আমরা এখন হয়রানি এবং প্রতারণার মধ্যে আছি। যখন টেস্ট করি তাদের রিপোর্টে এক জায়গায় এক এক রকম আসে। পরে ডাক্তার আবার টেস্ট দেয়। এতে একদিকে যেমন আমাদের অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তেমনি ভুল চিকিৎসার আতঙ্কে দিন কাটছে।
মেশিনের ভুল দাবি করে অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সজীব বলেন, আমাদের টেস্ট ঠিকই আছে। হয়তো মেশিনে কোনো ত্রুটির জন্য প্রিন্টিং মিসটেক হয়েছে। এছাড়া আমাদের টেস্টে ভুল নেই।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধতা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগে আবেদন করা আছে।
বরগুনার সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি মনির হোসেন কামাল জাগো নিউজকে বলেন, জনস্বাস্থ্য নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা মেনে নেওয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। আমরা এরই মধ্যে এ বিষয়ে সিভিল সার্জনকে জানিয়েছি। সিভিল সার্জন জানিয়েছেন এখন থেকে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের টেস্ট হাসপাতালেই করা হবে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রেজোয়ানুর আলম বলেন, আমাদের সিবিসির কিট ছিল না। তাই রোগীদের বাইরে থেকে টেস্ট করাতে হয়েছে। অনেক ভুল রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। যা রোগীর জন্য বিপদজনক। আমরা দ্রুত হাসপাতালেই ডেঙ্গুর সব ধরনের টেস্ট চালুর ব্যবস্থা নিচ্ছি, যাতে রোগীদের বাইরের মানহীন সেন্টারে না যেতে হয়।
এদিকে, বরগুনায় ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬৫ জন। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৯০৫ জন, আর মারা গেছেন ১৭ জন। এরমধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৯২ জন। আর জেলার সব হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২১৪ জন।
রোগী ও তার স্বজনরা বলছেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে ক্লিনিকে গিয়ে তাদের টেস্ট করাতে হচ্ছে। আর এতে বাধছে বিপত্তি।
এমনই একজন রোগী মরিয়ম। তিনি বরগুনার খেজুরতলা এলাকার বাসিন্দা। ১৩ জুন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। ভর্তি হওয়ার সময় তার প্লাটিলেট ছিল ৬৭ হাজার। পরদিন স্থানীয় অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে টেস্ট করিয়ে রিপোর্টে দেখা যায় প্লাটিলেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার!
একদিনের ব্যবধানে এমন রিপোর্ট দেখে চক্ষু চড়কগাছ বরগুনা জেনারেলে হাসপাতালের চিকিৎসকের। পরে আরেকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট করালে রিপোর্টে প্লাটিলেট দেখা যায় ৫৪ হাজার। চিকিৎসকের সচেতনতায় ভুল রিপোর্টের কারণে অপচিকিৎসা থেকে রক্ষা পেলেও বিপাকে পড়তে হয় এই দরিদ্র নারীকে।
এর আগে ১১ জুন ১০ বছর বয়সী তানিয়া নামের এক শিশুকে একই ডায়াগনস্টিক থেকে ১৮ লাখ ৯৫ হাজার প্লাটিলেটের একটি রিপোর্ট দেওয়া হয়। এটিও ধরা পড়ে চিকিৎসকের চোখে, না হলে হয়তো অপচিকিৎসার শিকার হতে হতো ওই শিশুকেও।
রোগীদের অভিযোগ, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুর প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালু না থাকায় বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের নেই সঠিক ল্যাব, নেই প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান। ফলে ভুল রিপোর্টের হার বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে।
এ বিষয়ে কথা হয় ভুক্তভোগী মরিয়মের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাসপাতালে সিবিসি টেস্ট হয় না, তাই বাইরে থেকে টেস্ট করতে হয়। আমি ‘অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সিবিসি টেস্ট করিয়েছি। সেখান থেকে রিপোর্ট এনে হাসপাতালে দেখানোর পর ডাক্তার বলছে- এই রিপোর্ট ভুল, আপনি অন্য জায়গায় টেস্ট করান। পরে অন্য ডায়াগনস্টিক থেকে রিপোর্ট আসার পর আমাকে ডাক্তার চিকিৎসা দিয়েছেন।
টেস্টে ভুল রিপোর্ট নিয়ে জাকির হোসেন নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে টেস্ট করার ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকে গিয়ে আমরা এখন হয়রানি এবং প্রতারণার মধ্যে আছি। যখন টেস্ট করি তাদের রিপোর্টে এক জায়গায় এক এক রকম আসে। পরে ডাক্তার আবার টেস্ট দেয়। এতে একদিকে যেমন আমাদের অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তেমনি ভুল চিকিৎসার আতঙ্কে দিন কাটছে।
মেশিনের ভুল দাবি করে অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সজীব বলেন, আমাদের টেস্ট ঠিকই আছে। হয়তো মেশিনে কোনো ত্রুটির জন্য প্রিন্টিং মিসটেক হয়েছে। এছাড়া আমাদের টেস্টে ভুল নেই।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধতা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগে আবেদন করা আছে।
বরগুনার সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি মনির হোসেন কামাল জাগো নিউজকে বলেন, জনস্বাস্থ্য নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা মেনে নেওয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। আমরা এরই মধ্যে এ বিষয়ে সিভিল সার্জনকে জানিয়েছি। সিভিল সার্জন জানিয়েছেন এখন থেকে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের টেস্ট হাসপাতালেই করা হবে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রেজোয়ানুর আলম বলেন, আমাদের সিবিসির কিট ছিল না। তাই রোগীদের বাইরে থেকে টেস্ট করাতে হয়েছে। অনেক ভুল রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। যা রোগীর জন্য বিপদজনক। আমরা দ্রুত হাসপাতালেই ডেঙ্গুর সব ধরনের টেস্ট চালুর ব্যবস্থা নিচ্ছি, যাতে রোগীদের বাইরের মানহীন সেন্টারে না যেতে হয়।
এদিকে, বরগুনায় ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬৫ জন। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৯০৫ জন, আর মারা গেছেন ১৭ জন। এরমধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৯২ জন। আর জেলার সব হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২১৪ জন।