হোটেলের খিচুড়িতে লোহার পেরেক, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ক্রেতা
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৫ এএম
রাজধানীর মতিঝিল থানার ঘরোয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে খাসির মাংসের ভুনা খিচুড়ির প্লেটে আধা ইঞ্চি লোহার পেরেক পাওয়ার ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন দুই ক্রেতা—মো. জহিরুল ইসলাম ও মার-আ-নূর ইসলাম সভিন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সভিন যুগান্তরকে জানান, সন্ধ্যার পর মতিঝিলে কিছু কেনাকাটা শেষে খিচুড়ি খাওয়ার জন্য আমরা সাড়ে সাতটার দিকে ঘরোয়া হোটেলে যাই। ২৯০ টাকা করে দু’টি খাসির মাংসের ভুনা খিচুড়ি অর্ডার দিই। আমার প্লেটে চার-পাঁচ লোকমা খাওয়ার পর খিচুড়ির ভেতর কাঠির মতো কিছু একটা চোখে পড়ে। পরে দেখি সেটা লোহার আধা ইঞ্চি পেরেক। একটুর জন্য গলায় ঢুকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
তিনি বলেন, এমন ঘটনা দেশের পুরনো ও নামিদামি রেস্টুরেন্টের ক্ষেত্রে অকল্পনীয়। আজ আমরা ছিলাম, কিন্তু আমাদের জায়গায় যদি কোনো শিশু বা অল্পবয়সী কেউ খেতে আসত, তাহলে সে পেরেকটি গিলে সরাসরি মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তো।
ক্রেতা জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টি ওয়েটারকে জানালে সে ভিডিও করতে নিষেধ করে। উল্টো বলে—‘এরকম দুর্ঘটনা হতেই পারে, আপনারা বাড়াবাড়ি করবেন না।’ পরে তারা খাবার বদলে দিতে চায় এবং বারবার ঘটনাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
জহিরুল আরও অভিযোগ করেন, রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা ভয় দেখিয়ে বলে—‘ঐতিহ্যবাহী রেস্টুরেন্টকে বদনাম করবেন না।’ আমরা বললাম, খাবারের মধ্যে পেরেক পাওয়া কোনও দুর্ঘটনা নয়, বরং অবহেলা। কিন্তু তারা কোনোভাবেই দায় নিতে চাইল না।
ঘরোয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের দ্বিতীয় তলার ম্যানেজার মো. আব্দুল্লাহ ঘটনাটিকে ‘দুর্ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, আমরা লাকড়ির চুলায় রান্না করি। সেখান থেকে দুই-একটা পেরেক চলে আসতেই পারে। বিলও নিইনি, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের হটলাইনে যোগাযোগ করলে কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম সবুজ যুগান্তরকে জানান, ওয়েবসাইটে লিখিত অভিযোগ দাখিল হলে তদন্তের মাধ্যমে মালিকপক্ষকে ডেকে শুনানি করা হবে। প্রমাণ মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘরোয়া হোটেলের স্বত্বাধিকারীর ছেলে আরিফুল ইসলাম সোহেল বলেন, ঘটনাটি যদি ঘটে থাকে, অবশ্যই এটি অপরাধ। খাবারের মধ্যে পেরেক থাকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি পুরোপুরি জেনে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিছুক্ষণ পরে আবার তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে সরাসরি দেখা করতে চান এবং ‘ঝামেলা শেষ করার’ প্রস্তাবসহ বিভিন্ন ধরনের সমঝোতার ইঙ্গিত দেন।