ভারতে যৌন হয়রানির শিকার দুই অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার, যা বলছে কর্তৃপক্ষ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০২ পিএম
ভারতের ইন্দোরে দুই অস্ট্রেলিয়ান নারী ক্রিকেটারকে যৌন হয়রানির শিকার বানিয়েছে এক মোটরসাইকেল আরোহী। বৃহস্পতিবার সকালে কফিশপে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সিএ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইন্দোরে কফিশপে যাওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ান নারী দলের দুই সদস্যের সঙ্গে এক মোটরসাইকেল আরোহী অশোভন আচরণ করেছে। দলীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিষয়টি পুলিশকে জানান, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’
ঘটনাটি ঘটে সকাল ১১টার দিকে, দলের হোটেল থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে। মোটরসাইকেল আরোহী প্রথমে দুই খেলোয়াড়কে অনুসরণ করে, এরপর একজনকে অশালীনভাবে স্পর্শ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। খেলোয়াড়রা সঙ্গে সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ড্যানি সিমন্সকে বিষয়টি জানান। এরপর স্থানীয় নিরাপত্তা সংস্থার সহযোগিতায় তাদের নিরাপদে হোটেলে পৌঁছে দেওয়া হয়।
পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, হোটেল রেকর্ড ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে তদন্ত চালায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী মোটরসাইকেলের নাম্বার প্লেটের তথ্য দিলে অভিযুক্তকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৭৪ নম্বর (নারীর মর্যাদা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে জোর প্রয়োগ) এবং ৭৮ নম্বর (পিছু নেওয়া বা অনুসরণ) ধারায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, এর আগেও তার নামে একাধিক অপরাধের রেকর্ড রয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘এটি শুধু এক নারী খেলোয়াড়ের সঙ্গে অসদাচরণ নয়, এটি ভারতের ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপন। কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন সাহস না করে।’ তিনি সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বোর্ডের সচিব দেবজিত সাইকিয়া বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়, যদিও বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা। ভারত অতিথিপরায়ণতার জন্য পরিচিত। আমরা এমন ঘটনার প্রতি জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল। মধ্যপ্রদেশ পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করি। আইন যেন যথাযথভাবে অপরাধীকে শাস্তি দেয়। প্রয়োজনে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করব।’
ঘটনার পরও অস্ট্রেলিয়া নারী দল মাঠে তাদের মনোযোগ ধরে রাখে। ইন্দোরে নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচে তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাত উইকেটে হারিয়ে গ্রুপে শীর্ষে থেকে সেমিফাইনালে উঠেছে।
এই ঘটনা ভারতে নারী খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট চলাকালে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়েও উঠেছে উদ্বেগের সুর।