Logo
Logo
×

রাজনীতি

সরকার গঠনের লক্ষ্যে নতুন কৌশলে জামায়াতসহ আট দল

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম

সরকার গঠনের লক্ষ্যে নতুন কৌশলে জামায়াতসহ আট দল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী অঙ্গনে এখন সর্বোচ্চ তৎপরতা চলছে। সমমনা আট দলকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। লক্ষ্য এবার আরও বড়-ন্যূনতম ১৫০ আসনে জয়।

জামায়াত ও শরিক দলগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানাচ্ছেন, সম্ভাব্য আটদলীয় এই নির্বাচনভিত্তিক সমঝোতা জোটের আলোচনায় দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে। আসন বণ্টন, যৌথ প্রার্থী ও প্রচারণা কৌশল-সব বিষয়েই আলোচনা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। কোন আসনে কোন দলের প্রার্থী এগিয়ে, কার জয়ের সম্ভাবনা বেশি-এসব বিবেচনায় মাঠপর্যায়ের আরেক দফা জরিপ চলছে।

জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বলছেন, এটি প্রচলিত রাজনৈতিক জোট নয়; বরং আসনভিত্তিক সমঝোতার একটি নির্বাচনী কৌশল। লক্ষ্য একটাই-যত বেশি সম্ভব আসনে জয়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই আসন সমঝোতা ও যৌথ প্রার্থী ঘোষণা করা সম্ভব বলে জোটের নেতারা জানিয়েছেন। প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা, সাংগঠনিক শক্তি ও বাস্তব জয়ের সম্ভাবনাকেই মূল মানদণ্ড ধরা হয়েছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, দলীয় প্রার্থী তালিকা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। সমমনা দলের সঙ্গে আলোচনার কারণে কিছু আসনে পরিবর্তন হতে পারে। তার দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জামায়াত একা শতাধিক আসনে জয় পাবে।

জোটের যৌথ কমিটি জরিপের ভিত্তিতে এখন চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করছে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই আট দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনী প্রচারের সময় বাড়ানোর জন্য চূড়ান্ত প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

জামায়াত ছাড়াও জোটে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। অভিন্ন নির্বাচনী ইশতেহার, প্রচার কৌশল ও আসন বণ্টন নিয়ে নিয়মিত বৈঠক চলছে।

ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, যে দলের প্রার্থী যে এলাকায় বেশি জনপ্রিয়, তাকেই সমমনা জোটের প্রার্থী করা হবে। লক্ষ্য-সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে বিজয়। জাগপার সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান জানান, আলোচনার অগ্রগতি সন্তোষজনক; চারটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আশা করছে তাদের দল। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব কাজী নিজামুল হক নাঈম বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি; তবে দু–একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে বলে আশা করছে তারা।

জামায়াতের দলীয় সূত্র জানায়, ন্যূনতম ১৮৫টি আসনে জয়ের পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ১৫০টি আসনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। নতুন ভোটার ও তরুণদের আকৃষ্ট করতে বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রচারণার জন্য সংগীত, প্রচার ভিডিও, শোভাযাত্রাসহ সব প্রস্তুতি থাকলেও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আমির শফিকুর রহমান।

গত এক বছরে ছয় দফা নিজস্ব জরিপ করেছে জামায়াত। এখন চলছে সমন্বিত কমিটির চূড়ান্ত জরিপ। জোটের নেতারা বলছেন, নির্বাচনী মাঠে নামার আগেই তারা একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে চান।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, জামায়াতের নেতৃত্বে সমমনা আট দলের এই সমন্বিত কৌশল নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার