গভীর সমুদ্রে জাহাজে লাফিয়ে উঠল ৩ মণ ইলিশ
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৬ এএম
সাধারণত জাল পেতেই মাছ ধরা হয়। কিন্তু এই মাছ ধরতে কোনো জাল লাগেনি। সাগর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে জাহাজে উঠেছে ইলিশ। এক-দুইটি নয়, বৃষ্টির মত প্রায় তিন মণ ইলিশ উঠেছে জাহাজটিতে।
পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের প্রথম বয়া ছাড়িয়ে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের গভীর বঙ্গোপসাগরে বিস্ময়কর এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ এমভি কেএসএল গ্লাডিয়েটর-এর নাবিকরা যেন হঠাৎই এক অপার্থিব বিস্ময়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
জাহাজের প্রকৌশলী রবিউল হোসেন শনিবার (২৯ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিনি ইলিশ বৃষ্টির সেই ভিডিও ধারণ করেন। সেই ভিডিও সাংবাদিকদেরকে দেখান।
তিনি সাংবাদিকদেরকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটির দিকে এগোচ্ছে জাহাজ। হঠাৎ সাগরের বুক চিরে জাহাজের দুই পাশ বেয়ে ছুটে আসে ছোট ছোট ইলিশের দল। যেন ভয়-মিশ্রিত উৎসবে একসঙ্গে লাফিয়ে উঠছে জলরূপী ইলিশের ঝাঁক। মুহূর্তেই ডেকে পড়তে থাকে রুপালি মাছ।
নাবিকদের কথায়, চোখের পলকে আনুমানিক তিন মণ ইলিশ উঠে এল ডেকে! আমরা যতটা পারলাম কুড়িয়ে নিলাম, বাকিটা আবার সাগরেই গড়িয়ে পড়ল।
ঘটনাটি এতটাই অবিশ্বাস্য যে জাহাজের প্রকৌশলী রবিউল হোসেন তৎক্ষণাৎ মোবাইল তুলে ১০ সেকেন্ডের ভিডিও ধরে রাখেন। সেই ভিডিওয় ধরা পড়ে সমুদ্রের বুকে রুপালি ঝাঁকের আতঙ্ক-ভরা ছুট, আর এক লাইটার জাহাজের ডেকে যেন আকস্মিক ‘ইলিশ-বৃষ্টি’র বিস্ময়।
সমুদ্রের এমন অদ্ভুত আচরণে হতবাক নাবিকদের একটাই মন্তব্য, এ রকম দৃশ্য জীবনে একবারই দেখা যায়।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাজীব সরকার জানান, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে ঘটনাটির পেছনে মূলত শিকারি মাছের তাড়া, জাহাজের আলো এবং শব্দের প্রভাব দায়ী হতে পারে।
অধ্যাপক রাজীব আরও জানান, জাহাজের তলার নেভিগেশন লাইট, ইঞ্জিনের কম্পন বা প্রপেলারের শব্দ অনেক সময় ছোট মাছকে আকর্ষণ করে কিংবা বিভ্রান্ত করে। এসব কারণেই তারা দল বেঁধে জাহাজের খুব কাছে চলে আসে।