বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের হুঁশিয়ারি প্রাথমিক শিক্ষকদের
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১১ এএম
দীর্ঘদিনের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা অব্যাহত কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ২৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলাকালেই বার্ষিক পরীক্ষা ঘনিয়ে আসায় নতুন আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা। শিক্ষকরা ঘোষণা দিয়েছেন— ৩০ নভেম্বর রাতের মধ্যেই দাবি পূরণ না হলে ১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো. মাহবুবর রহমান জানান, দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস না পাওয়ায় কর্মবিরতি স্থগিত করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, “দেশের ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। রবিবারের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে আমরা বাধ্য হয়ে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করবো।”
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) তথ্য অনুযায়ী, দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এখানে কর্মরত প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষকের উল্লেখযোগ্য অংশই সহকারী শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকরা ইতোমধ্যে ১০ম গ্রেডের বেতন সুবিধা পেলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১৩তম গ্রেডে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন ধরে গ্রেড উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে দাবি জানানো হলেও বাস্তব অগ্রগতি খুবই সীমিত—এমন অভিযোগ আন্দোলনকারী শিক্ষকদের।
গত ৮–১২ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। সরকারের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি স্থগিত করলেও পরবর্তীতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না থাকায় আবার কর্মবিরতিতে যান।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২৭ নভেম্বর ডিপিই মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন না করার অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষকরা জানান, দাবির নিশ্চয়তা ছাড়া কর্মসূচি স্থগিত করা সম্ভব নয়।
পরিষদের আরেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, “ডিজি স্যার জানিয়েছেন পে-কমিশন বিষয়টি দেখছে। কিন্তু আমাদের দাবি সরাসরি বেতন গ্রেড উন্নীতকরণ—যা সরকার চাইলে খুব কম সময়েই বাস্তবায়ন করতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধা বাড়লে শিক্ষার মানও উন্নত হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা পিছিয়ে নেওয়া যেতে পারে।”
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি
১. বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন
৩. শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিতকরণ
সরকার সরাসরি ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে না চাইলেও অন্তর্বর্তীকালীনভাবে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার সুপারিশ করেছে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।