তারেক রহমানের ফেরা, সরকারি বিধিনিষেধ আছে কি না জানালেন প্রেস সচিব
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সরকারের তরফ থেকে কোনও আপত্তি বা বিধিনিষেধ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার (২৯ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া এক পোস্টে তিনি একথা বলেন।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমানের আজকের বক্তব্য যে, এখনই দেশে ফেরার বিষয় সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ তার জন্য অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, এটা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলমের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে তার বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে কোনও ধরনের বিধিনিষেধ রয়েছে কি না।
তিনি লিখেছেন, প্রেস সচিব জানান যে এ ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কোন বিধিনিষেধ অথবা কোনও ধরনের আপত্তি নাই। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ইতোমধ্যে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।'
এর আগে, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মায়ের অসুস্থতা ও দেশে ফেরা প্রসঙ্গে পোস্ট করেন তারেক রহমান। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোন সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সকলের মতো এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। স্পর্শকাতর এই বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত। রাজনৈতিক বাস্তবতার এই পরিস্থিতি প্রত্যাশিত পর্যায়ে উপনীত হওয়া মাত্রই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমার সুদীর্ঘ উদ্বিগ্ন প্রতিক্ষার অবসান ঘটবে বলেই আমাদের পরিবার আশাবাদী।
এদিকে গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশজুড়ে যে দোয়া ও সহমর্মিতা প্রকাশিত হচ্ছে, তার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মায়ের সংকটজনক অবস্থায় দেশে ফিরে পাশে থাকার গভীর আকাঙ্ক্ষা থাকলেও রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাঁর সিদ্ধান্ত সীমাবদ্ধ—নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমন স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি।
শনিবার সকালেই তারেক রহমানের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
স্ট্যাটাসে তিনি জানান, খালেদা জিয়া এখন ‘গুরুতর অসুস্থ ও সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাঁর রোগমুক্তির জন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দোয়া এবং ভালোবাসা জিয়া পরিবারকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তারেক রহমান লিখেন, “এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহস্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোনো সন্তানের মতো আমারও আছে। তবে এ ক্ষেত্রে আমার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ এককভাবে উন্মুক্ত নয়।”
তিনি ইঙ্গিত দেন, রাজনৈতিক বাস্তবতা তাঁর প্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে এখনো বাঁধা হয়ে আছে। তবে কাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলেই তিনি দেশে ফিরতে পারবেন বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।
তারেক রহমান তার স্ট্যাটাসে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের পেশাদার সেবার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি কয়েকটি বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র থেকেও উন্নত চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার আগ্রহ জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বেশ কয়েক দিন ধরে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে। এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা “অত্যন্ত সংকটময়”।
দলীয় নেতারা জানান, চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানো শারীরিক জটিলতার কারণে চিকিৎসক দল সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে তার সেবা করছেন।