Logo
Logo
×

জাতীয়

এমন সংকটকালে যে কারণে আসতে পারছেন না তারেক রহমান

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম

এমন সংকটকালে যে কারণে আসতে পারছেন না তারেক রহমান

গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশজুড়ে যে দোয়া ও সহমর্মিতা প্রকাশিত হচ্ছে, তার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মায়ের সংকটজনক অবস্থায় দেশে ফিরে পাশে থাকার গভীর আকাঙ্ক্ষা থাকলেও রাজনৈতিক বাস্তবতায় তাঁর সিদ্ধান্ত সীমাবদ্ধ—নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমন স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি।

শনিবার সকালেই তারেক রহমানের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

স্ট্যাটাসে তিনি জানান, খালেদা জিয়া এখন ‘গুরুতর অসুস্থ ও সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাঁর রোগমুক্তির জন্য সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দোয়া এবং ভালোবাসা জিয়া পরিবারকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তারেক রহমান লিখেন, “এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহস্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোনো সন্তানের মতো আমারও আছে। তবে এ ক্ষেত্রে আমার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ এককভাবে উন্মুক্ত নয়।”

তিনি ইঙ্গিত দেন, রাজনৈতিক বাস্তবতা তাঁর প্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত গ্রহণে এখনো বাঁধা হয়ে আছে। তবে কাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলেই তিনি দেশে ফিরতে পারবেন বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।

তারেক রহমান তার স্ট্যাটাসে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের পেশাদার সেবার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি কয়েকটি বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র থেকেও উন্নত চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার আগ্রহ জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বেশ কয়েক দিন ধরে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে। এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা “অত্যন্ত সংকটময়”।

দলীয় নেতারা জানান, চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানো শারীরিক জটিলতার কারণে চিকিৎসক দল সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে তার সেবা করছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সংকটাপন্ন শারীরিক পরিস্থিতির এখনও কোনও উন্নতি হয়নি। শারীরিক নানা জটিলতায় গত তিন দিন ধরে সিসিইউতে তার চিকিৎসা চলছে।  

শনিবার (২৯ নভেম্বর) তার রোগমুক্তি কামনায় দলমত নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষ দোয়া করায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এছাড়াও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল নয় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাতে খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে মাঝরাতে হাসপাতালে যান মির্জা আব্বাস। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা দূরত্ব বজায় রেখে তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি, আমাদেরকে চিনতে পেরেছেন এবং আমরা সালাম দিয়েছি, উত্তর দিয়েছেন।   

উল্লেখ্য যে, নানা রোগে আক্রান্ত প্রায় ৮০ বছর বয়সি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর ফুসফুসে সংক্রমণ এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সিসিইউতে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ধারাবাহিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে চলছে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা।   

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানান, দেশ বিদেশের চিকিৎসক দল বরাবরের মত তাদের উচ্চমানের পেশাদারিত্ব ছাড়াও সর্বোচ্চ আন্তরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বন্ধুপ্রতীম একাধিক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও উন্নত চিকিৎসাসহ সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এমন সংকটকালে যে কোনও সন্তানের মতো মায়ের পাশে থাকার ও স্নেহ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা তারও আছে। কিন্তু সেটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তার জন্য অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।

রাজনৈতিক বাস্তবতার সেই পরিস্থিতি প্রত্যাশিত পর্যায়ে পৌঁছালে দ্রুতই প্রতিক্ষার অবসান ঘটবে বলে আশা তারেক রহমান ও তার পরিবারের। দলীয় নেতাকর্মীদের হাসপাতালের সামনে ভিড় না করার আহ্বান জানানো হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।

এদিকে তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে গিয়েছেন এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল। এর মধ্যে রয়েছেন তাসনিম জারা, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার