বাসচালককে পুড়িয়ে হত্যা, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আ.লীগ নেতা গ্রেফতার
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৩ পিএম
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাসে অগ্নিসংযোগ ও চালককে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আনোয়ার হোসেন (৩৫) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে ফুলবাড়িয়া পৌরসভার চাঁদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আনোয়ার হোসেন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের চাঁদপুর এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। তিনি একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলে জানিয়েছে ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান।
ওসি জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছি। ফুটেজে কিছুটা অস্পষ্ট থাকায় আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। ফুটেজ দেখে ৮০ পার্সেন্ট নিশ্চিত হয়েছি- আনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাই আনোয়ার হোসেনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে বিকালে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া বাসচালক মো. জুলহাসের (৩০) ছোট বোন ময়না বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আলম এশিয়া পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আসে। রাত ২টা ৪৫ মিনিটে বাসটি তেল নেওয়ার জন্য পেট্রল পাম্পের সামনে এলে সব যাত্রী নেমে যান। প্রতিদিনের মতো রাতে বাসটি সেখানেই রাখা হয়।
এদিকে রাত বেশি হওয়ার কারণে বাড়ি যেতে ঝুঁকির কথা চিন্তা করে ভোরে নামবে এমন চিন্তা করে চর রাধাকানাই গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা রুমকি ও তার ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদশা বাসের ভেতরেই থেকে ভোর হওয়ার অপেক্ষায় ঘুমিয়ে যান। বাসের ভেতরের সিটে ঘুমিয়ে পড়েন চালক জুলহাস। এ সময় তিনজন দুর্বৃত্ত এসে বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তাৎক্ষণিক চলে যায়।
এতে বাসটিতে আগুন দাওদাও করে জ্বলতে থাকা অবস্থায় ভেতরে থাকা শহিদুল ইসলাম বাদশা বের হতে পারলেও তার মা শারমিন সুলতানা রুমকি আহত অবস্থায় বের হন। এ সময় ভেতরে থাকা জুলহাস অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বাসে আগুন দেওয়ার ওই ঘটনা ইসলাম ফিলিং স্টেশনের বিপরীত দিকে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের শোরুমের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।
এতে দেখা যায়, রাত ৩টা ১৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আলম এশিয়া পরিবহণের বাসের সামনে যান দুজন ব্যক্তি। একজনের মাথায় ছিল টুপি, অন্যজনের মুখ ও মাথা কাপড় দিয়ে বাঁধা। এর ৩১ সেকেন্ড পর পেছন দিক থেকে আসেন আরও এক ব্যক্তি। তাদের সঙ্গে ছিল একটি বোতল। ওই বোতলের তরল দাহ্য পদার্থ বাসটির সামনে ও ভেতরে চালকের আসনে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। প্রথমে বাসের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর একটি লাঠিতে আগুন ধরিয়ে সেটি বাসের ভেতরেও দেওয়া হয়। পরে দ্রুত ওই তিনজন চলে যান।