Logo
Logo
×

জাতীয়

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারেক রহমানের পরিকল্পনার কথা জানালেন তার উপদেষ্টা

Icon

জাগো বাংলা প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারেক রহমানের পরিকল্পনার কথা জানালেন তার উপদেষ্টা

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তার উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন। জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ক্লাস সিক্স থেকে লার্নিং উইথ হ্যাপিনেস নামে (আনন্দের মাধ্যমে শেখা) নতুন সাবজেক্ট যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

মাহদী আমীন বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার একটা বড় সমস্যা হচ্ছে জোর করে চাপিয়ে পড়াশোনা করানো হয়। পড়াশোনার ভেতর আনন্দ নাই। যার কারণে আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনায় গেলে ক্লাস সিক্স থেকে একটা নতুন সাবজেক্ট যুক্ত করবেন। সেই সাবজেক্টের নামই হবে লার্নিং উইথ হ্যাপিনেস অর্থাৎ আনন্দের মাধ্যমে শেখা। সেখানে শিল্প, সংস্কৃতি, খেলাধুলা থাকবে। সবাইকে যে শুধু অংক করতে হবে আর বাংলা পড়তে হবে তাই না। চাইলে কিন্তু একজন ফুটবলও খেলতে পারেন। ক্রিকেটও খেলতে পারেন। সেই খেলাধুলা হবে শিক্ষা কারিকুলামের একটা অবিচ্ছেদ্ধ অংশ। শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় এক অনুষ্ঠানে মাহদী আমিন এসব কথা জানান।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শিশু উৎসব ও জুলাই-আগস্ট চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ও পরিচালনা করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন।

মাহদী আমিন বলেন, আমাদের সন্তানদের সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান অসাধারণ কিছু চিন্তাভাবনা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। উনি এমন একটা বাংলাদেশ চান যেখানে আমাদের শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে থেকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।

শিশুদের বিকাশে বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি তৃতীয় আরেকটি ভাষা শিক্ষার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের শিশুরা বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি আরেকটি ভাষা শিখবে। সেটা হতে পরে জাপানিজ, ফরাসি, জার্মানি, চায়নিজ, কিংবা অন্য যে কোনো ভাষা। এর মাধ্যমে তারা বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। 

মাহদী আমিন বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হতে হবে যেখানে সুন্দর এবং ভালো একটা ভবিষ্যতের জন্য ছেলে-মেয়েরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হয়। এ কারণে আমাদের নেতা বলেছেন ওনার একটা কর্মসূচি থাকবে ওয়ান চাইল্ড ওয়ান ট্রি অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রতিটা শিশু প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ করবে। প্রতিটা শিশু প্রতিবছর খাল খনন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত থাকবে। আমরা এমন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা চাই যেখানে শহর এবং গ্রামের বৈষম্য থাকবে না। 

তিনি বলেন, আমাদের নেতার চিন্তাভাবনা আছে, শিক্ষকদের নিয়ে। শিক্ষার্থীদের ছাত্র-ছাত্রীদের সৃজনশীলতা তৈরিতে যেহেতু শিক্ষকদের একটা বড় ভ‚মিকা রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষকের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে। ওয়ান ট্যাপ ওয়ান টিচার অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রতিটা প্রাইমারি স্কুলের টিচারের জন্য একটি করে ট্যাব কম্পিউটার উনি দিতে চান। তার মাধ্যমে গ্রামে বসেই শহরের যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কারিকুলাম রয়েছে, যে ট্রেনিং রয়েছে, সেটি শিক্ষকরা পেতে পারেন। 

তিনি বলেন, এর পাশাপাশি আমাদের নেতার তারেক রহমানের আরেকটা পরিকল্পনা আছে। গ্রামসহ বাংলাদেশের প্রতিটি প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম শুরু করা। অর্থাৎ প্রত্যেকটা স্কুলে কয়েকটা নির্দিষ্ট ক্লাসরুম থাকবে, যেখানে প্রজেক্টর থাকবে, মাল্টিমিডিয়া থাকবে, অডিও-ভিডিও সুযোগ-সুবিধা থাকবে। সেখানে ফটো দেখানো যাবে, সেখানে ডকুমেন্টারি দেখানো যাবে। এবং ঢাকার যারা বেস্ট টিচার রয়েছে তাদের যে শিক্ষকতা, তাদের যে টিচিং, তাদের যে ট্রেনিং - সেটা গ্রামে আমরা দেখাতে পারব। এর মাধ্যমে শহর এবং গ্রামের শিক্ষা কারিকুলামের, শিক্ষা ট্রেনিংয়ের শিক্ষার গুণগত মানের যে পার্থক্য সেটা আমরা অনেকটুকু কমিয়ে আনতে চাই। সুতরাং প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যাপাসিটি এনসমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষকদের আরো বেশি ট্রেনিং এবং শিক্ষার্থীদেরকে আরো সহজতরভাবে আরো আধুনিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে টোটালি ঢেলে সাজাতে চাই।

মাহদী আমিন বলেন, আমাদের একটা চিন্তা আছে যেটি তারেক রহমান বলেছেন। তা হলো শিক্ষাকে আরো বেশি কর্মমুখী করতে হবে। আরো বেশি বাস্তবসম্মত করতে হবে।  যেন আমাদের যারা তরুণ-তরুণী রয়েছে, যুবক-যুবতী রয়েছে, আগামী বাংলাদেশে উনারা কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আরো বেশি চাকুরিতে সম্পৃক্ত হতে পারেন। তারা যেন নিজের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। যার কারণে আমরা আমাদের টেকনিক্যাল এন্ড ভোকেশনাল এডুকেশন, যেটাকে বলা হয় কারিগরি শিক্ষা, সেটাকে আরও শক্তিশালী করতে চাই। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষকের জন্য স্কুল এবং কলেজের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত করতে চাই। 

তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে আগামীর যে বাংলাদেশ সেটাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আমাদের তরুণ-তরুনী যুবক-যুবতীদের। যার কারণে কিন্তু গণঅভ্যুত্থানে সবচাইতে বেশি ভূমিকা রেখেছিল আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মাদ্রাসা এবং স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। আমাদের ৫০ জনেরও বেশি শিশু শহীদ হয়েছিলেন এই গণঅভ্যুত্থানে। সুতরাং গণঅভ্যুত্থানে সে আকাঙ্খাকে যদি আমরা ধারণ করি তাহলে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ। এমন একটি বাংলাদেশ যেখানে শিশুদের সমৃদ্ধি থাকবে। তাদেরকে আমরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবো। এবং আমরা নিশ্চিত করব বাংলাদেশের বিপুল যে জনগোষ্ঠী এটাই আমাদের সবচাইতে বড় শক্তির জায়গা। সেজন্য আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো কিভাবে সৃজনশীল, মেধাভিত্তিক ও বৈষম্যহীন করতে পারি, কারিকুলাম এবং একাডেমিক সিস্টেমকে সংস্কারের মাধ্যমে আরো বেশি বাস্তবমুখী এবং আনন্দমুখর কিভাবে করতে পারি সেটা নিয়ে কাজ করতে চাই।

সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল মোনায়েম মুন্না আমন্ত্রিত অতিথি, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু ও অভিভাবক, বিচারকসহ সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। পরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এতে কয়েক শত শিশু, তাদের অভিভাবক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও যুবদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উৎসব শেষে শিশুদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার