Logo
Logo
×

জাতীয়

সুইপার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক রেজোয়ান

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম

সুইপার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক রেজোয়ান

কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সুইপার থেকে হিসাবরক্ষক হওয়া মো. রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর। মাত্র ২৩ হাজার টাকার বেতনে কোটি কোটি টাকার মালিক এখন তিনি।

স্থানীয়দের দাবি, মাত্র ২৩ হাজার টাকার বেতনে চাকরি করে তিনি গত কয়েক বছরে নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন কয়েকটি বিলাসবহুল বাড়ি। রয়েছে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকার সম্পদ। ১৯৮৯ সালে এমএলএসএস পদে সুইপারে যোগ দেন রেজোয়ান। দীর্ঘ কর্মজীবনে পদোন্নতি পেয়ে ২০১৮ সালে বর্তমান পদে আসেন। কিন্তু ৮ বছর ধরে একই কর্মস্থলে থেকে রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ কাঠা জমিতে বহুতল ভবন করে তা ভাড়া দিয়েছেন রেজোয়ান। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে স্ত্রী কহিনূর বেগমের নামে নতুন বাড়ি কিনেছেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ছেলে নাইম মাতুব্বর ও ছোট মেয়ে মুনমুনের নামে দুটি আলিশান বাড়ি করেছেন তিনি।

এ ছাড়া নামে-বেনামে বিভিন্ন জায়গায় কিনেছেন জমি। রেজোয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের পেনশন ও অন্যান্য কাগজপত্র ছাড় করতে বিপুল পরিমাণ ঘুষ নিয়েছেন। এমনকি হাসপাতালের আসবাবপত্র তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। 

রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। সম্প্রতি স্থানীয় সাংবাদিকরা তার দুর্নীতির বক্তব্য নিতে গেলে হাসপাতালের কক্ষের ভেতরে তার মেয়েকে দিয়ে মব সৃষ্টি করে সাংবাদিকদের হেনস্তা করেছেন। এমনকি সাংবাদিকদের নামে মিথ্যাও মামলা করেছেন।

ভুক্তভোগী শুভঙ্কর শিকদার বলেন, ‘আমার মা মিনা রানী ঠাকুর ২০২০ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ছিলেন সিনিয়র স্টাফ নার্স। মায়ের পেনশনের টাকা তুলতে গেলে মোড়লগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসাবরক্ষক রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকারও বেশি ঘুষ নেন। এ বিষয়ে আমি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।’


রেজোয়ান মাতুব্বরের বাড়িতে কাজ করা রাজমিস্ত্রি মো. আলী মোল্লা বলেন, ‘রেজোয়ানের দুটি বাড়িতে কাজ করেছি। দুটি বিলাসবহুল বাড়ি করতে তার খরচ হয়েছে ১ কোটি টাকারও বেশি। তিনি কীভাবে এই চাকরি করে চার-পাঁচটি বাড়ির মালিক হয়েছেন, তা আমারও প্রশ্ন।’


মোড়লগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দুর্নীতির খবর সংগ্রহ করতে গেলে রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর স্থানীয় তিন সাংবাদিককে আটকে রেখে বাইরে থেকে তার ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে মব তৈরি করেন এবং পরে তার মেয়েকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করান।’


অভিযোগের বিষয়ে রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘আমার একটাই বাড়ি, সেটি গ্রামে। আমি কখনো কারও কাছ থেকে ঘুষ নিইনি। আমার ছেলে-মেয়েদের জন্য যে বাড়িটি করেছি, সেটি আমার নানাবাড়ির জায়গায়।’


এ বিষয়ে বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. আ স মাহবুবুল আলম বলেন, ‘রেজোয়ান হোসেন মাতুব্বরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার