জামায়াতের গণমিছিলে সংঘর্ষ, প্রার্থীর হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হলো মাইক্রোফোন!
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৩ এএম
কুমিল্লার চান্দিনায় জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা উত্তর জেলা আয়োজিত গণমিছিলে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লা-৭ আসন থেকে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ও মনোনয়ন প্রত্যাশী অপর প্রার্থীর নেতাকর্মীদের মাঝে এ ঘটনা ঘটে।
এছাড়া ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থীর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাস স্টেশন এলাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে পাঁচ দফা দাবিতে গণমিছিলে এ ঘটনা ঘটে। এতে কোনো নেতাকর্মী গুরুতর আঘাত না পেলেও হাতাহাতি ও ধস্তা-ধস্তির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পাঁচ দফা দাবিতে গণমিছিলের শেষ পর্যায়ে জামায়াতের চান্দিনা উপজেলার নায়েবে আমির ও জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দেওয়ার সময় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে অপর একটি গ্রুপ। তারা জামায়াত মনোনীত প্রার্থীর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেয়। এ সময় কয়েকজন নেতাকর্মী ‘দল বিক্রি চলবে না, আওয়ামী দোসর প্রার্থী মানি না’ স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় নেতাকর্মীরা জেলা আমির আব্দুল মতিন ও জেলা সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সংগঠনটির নেতাকর্মীরা জানান, কুমিল্লা-৭ চান্দিনা আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নেতাকর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন। তাদের অভিযোগ এমপি প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সংগঠনের নিয়ম না মেনে ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে উত্তর জেলা সিন্ডিকেট করে মাওলানা মোশাররফকে এমপি প্রার্থী ঘোষণা করে।
ব্যারিস্টার মোস্তফা শাকের উল্লাহ বলেন, মনোনয়ন দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।
চান্দিনা উপজেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি সাজিদ আল আমিন সোহাগ বলেন, জেলা আমির মতিন ও সেক্রেটারি শহীদ টাকা খেয়ে মোশাররফকে প্রার্থী ঘোষণা করে। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রাণ গোপালের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেছেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তপন বকসীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জেলা সংগঠন একজন আওয়ামী লীগের দালালকে জামায়াতের মাধ্যমে নরমালাইজ করছেন।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মিজানুর রহমান জানান, প্রার্থী মনোনয়ন করতে সম্পূর্ণ সাংগঠনিক প্রক্রিয়াতেই করা হয়েছে। বেশ কয়েক দিন যাবত মোস্তফা শাকের উল্লাহ সমর্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। সোমবার গণমিছিলে তা প্রকাশ পেয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে দ্রুত আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।
জামায়াতে ইসলামীর চান্দিনা উপজেলার নায়েবে আমির ও জামায়াত মনোনীত মাওলানা মোশাররফ হোসেন বলেন, দলীয় নেতাকর্মীরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত। যার পক্ষে মিছিল হচ্ছে, অন্য পক্ষ তার বিরুদ্ধে মাঠে আছে। আমি কোনো রাজনৈতিক আপস করিনি। স্থানীয় উন্নয়নমূলক আলোচনায় অংশ নেওয়াকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কারণ আমি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, যে দলই ক্ষমতায় আসুক দাওয়াত দিলে আমাকে সেখানে যেতে হয়। তাছাড়া উন্নয়নমূলক কাজে আমাকে অংশ নিতেই আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ছবি উঠেছে।
অর্থের বিনিময়ে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপার অস্বীকার করে কুমিল্লা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আব্দুল মতিন বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম জানান, জামায়াতে ইসলামীর দুপক্ষের মাঝে হাতাহাতি ঘটলেও তাদের নেতাকর্মীরাই তার নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।