Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যে ব্যাপক হারে কমেছে নিট অভিবাসন

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২২ এএম

যুক্তরাজ্যে ব্যাপক হারে কমেছে নিট অভিবাসন

যুক্তরাজ্যে নিট অভিবাসন কমেছে ৬৯ শতাংশ৷ ২০২৪ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশটির নিট অভিবাসন কমে হয়েছে মাত্র দুই লাখ চার হাজার৷

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, নিট অভিবাসনে এই অগ্রগতি ক্ষমতাসীন লেবার প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জন্য স্বস্তির খবর৷

ইতিমধ্যেই অভিবাসন ইস্যুতে কট্টর ডানপন্থি রিফর্ম ইউকে দলের চাপ বাড়ছিল স্টারমার সরকারের ওপর৷ এমন পরিস্থিতিতেই নিট অভিবাসনের ক্ষেত্রে এই অগ্রগতি সরকারের জন্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ৷

অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্স (ওএনএস) জানিয়েছে, এই পরিসংখ্যানে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে পৌঁছানো অনিয়মিত আগমনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷ নিট অভিবাসন হ্রাসের পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি৷ 

এর মধ্যে অন্যতম হলো ইইউর বাইরের দেশগুলো থেকে কাজ বা পড়াশোনার উদ্দেশে আসা মানুষ ও তাদের নির্ভরশীলদের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং ব্রিটিশ নাগরিকদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া৷

নিট অভিবাসন বলতে বোঝানো হয়, এক বছরে একটি দেশে আসা মানুষ এবং ওই এক বছরে দেশটি ছেড়ে যাওয়া মানুষের পার্থক্যকে৷

ওএনএস এর সাম্প্রতিক হিসাব বলছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক বছরে আট লাখ ৯৮ হাজার মানুষ যুক্তরাজ্যে এসেছেন এবং ছয় লাখ ৯৩ হাজার মানুষ স্থায়ীভাবে দেশ ছেড়েছেন৷ এটি ২০২১ সালের পর যে কোনো ১২ মাসের জন্য সর্বনিম্ন সংখ্যা৷

২০২৪ সালের বার্ষিক নিট অভিবাসনের হিসেব গত বছরের মে মাসে প্রকাশিত হয়েছিল৷ প্রথমে নিট অভিবাসনের সংখ্যা চার লাখ ৩১ হাজার বলা হলেও পরে তা সংশোধন করে কমিয়ে তিন লাখ ৪৫ হাজার উল্লেখ করা হয়েছিল৷ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা ছিল আট লাখ ৬০ হাজার।

বৃহস্পতিবার বিরোধী কনজারভেটিভরা দাবি করেছে, অভিবাসন কমার কৃতিত্ব তাদের৷ কারণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বে ওয়ার্ক ভিসা, নির্ভরশীল এবং শিক্ষার্থী ভিসা নীতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল৷ ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগেই তিনি এসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন৷

কঠোর হচ্ছে অভিবাসন নীতি

যদিও এই পরিসংখ্যান স্টারমার সরকারের জন্য স্বস্তির কিন্তু অনিয়মিত অভিবাসনের ক্ষেত্রে তা কোনো স্বস্তি আনেনি। 

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন ৩৯ হাজারের বেশি মানুষ৷ যাদের অধিকাংশই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে পালিয়ে এসেছেন৷ এই সংখ্যা ২০২৪ সালের মোট আগমনের চেয়েও বেশি৷ তবে ২০২২ সালের কনজারভেটিভ সরকারের সময়কার রেকর্ড থেকে কম৷

ব্রেক্সিটের অন্যতম মুখ নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বে রিফর্ম ইউকে দল অভিবাসন ইস্যুতে ধারাবাহিক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সারা বছরজুড়ে লেবার দলের চেয়ে জরিপে দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে৷

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ চলতি মাসের শুরুতে আইনি ও অনিয়মিত–দুই ধরনের অভিবাসন কমাতে নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন৷ 

ফারাজের দলের বাড়তি জনপ্রিয়তার প্রেক্ষিতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ছোট নৌকার আগমন নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যে ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ নামে নতুন এক চুক্তিও কার্যকর হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ উদ্যোগের আওতায় এখন পর্যন্ত ১৫৩ জনকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং ১৩৪ জনকে যুক্তরাজ্যে নেয়া হয়েছে।

এই নীতির অধীনে যুক্তরাজ্যে যেসব অনিয়মিত আগমনকারীকে আশ্রয়ের জন্য অযোগ্য বিবেচনা করে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়, বিনিময়ে ফ্রান্স থেকে আরেকজনকে ‘‘নতুন নিরাপদ ও বৈধ পথ’’ ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়৷

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার