Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

অবৈধভাবে কাজের সুযোগ বন্ধে যুক্তরাজ্যে আসছে ডিজিটাল আইডি

Icon

ইনফোমাইগ্রেন্টস

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৮ এএম

অবৈধভাবে কাজের সুযোগ বন্ধে যুক্তরাজ্যে আসছে ডিজিটাল আইডি

অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে অবৈধভাবে কাজের সুযোগ বন্ধ করতে ফুড ডেলিভারি, বিউটি পার্লার এবং গাড়ি ধোয়ার ব্যবসার দিকে বিশেষ নজর রাখছে যুক্তরাজ্য৷ মঙ্গলবার ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, লক্ষ্যভিত্তিক অভিযানের মধ্যে দিয়ে অবৈধভাবে কাজ করার অভিযোগে গ্রেপ্তারের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৬৩ শতাংশ বেড়েছে৷

গত বছর ভূমিধস বিজয় নিয়ে ক্ষমতায় আসে লেবার পার্টি৷ কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সরকারের জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করেছে৷ এর অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, জনমনে অভিবাসন নিয়ে তৈরি হওয়া উদ্বেগকে৷ অভিবাসনবিরোধী ডানপন্থি দল রিফর্ম ইউকে পার্টির চাপের মুখে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা কমানো হবে৷

এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ বলেছেন, ‘‘অবৈধভাবে কাজ করার সুযোগ এই দেশে অনিয়মিত পথে আসতে চাওয়া মানুষের জন্য প্রলোভন তৈরি করে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘এখন থেকে তা আর হবে না৷’’

ব্রিটিশ হোম অফিস বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেষ ১২ মাসে ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট আট হাজারের বেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে৷ সংখ্যাটি তার আগের বছরের তুলনায় ৬৩ শতাংশ বেশি৷ গ্রেপ্তার হওয়া এসব অভিবাসীদের মধ্যে অন্তত এক হাজার ৫০ জনকে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷

শাবানা মাহমুদ বলেন, ‘‘যারা বিউটি সেলুন, গাড়ি ধোয়ার ব্যবসা বা ডেলিভারি ড্রাইভার হিসেবে অবৈধভাবে কাজ করছেন, তাদের গ্রেপ্তার, আটক এবং দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে৷’’

‘‘ব্রিটেনের সীমান্ত সুরক্ষিত করতে যা কিছু প্রয়োজন, আমি তা করবই’’, বলেও ঘোষণা দিয়েছে শাবানা৷

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, জীবনযাত্রার ব্যয়ের পর অভিবাসনই হলো ব্রিটিশ ভোটারদের অন্যতম প্রধান উদ্বেগ৷ অবৈধভাবে কাজের সুযোগ বন্ধে সরকারের এই চলমান অভিযানকে অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে বৃহত্তর কৌশলের অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে৷

কাজের অধিকার প্রমাণে ডিজিটাল আইডি

সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই পরিকল্পনার আরেকটি অংশ ঘোষণা করেছেন৷ তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা যুক্তরাজ্যে কাজ করবেন, তাদের সবার কাছে বাধ্যতামূলক ডিজিটাল পরিচয়পত্র থাকতে হবে৷

শুধু অনুমতি থাকা ব্যক্তিরাই যাতে যুক্তরাজ্যে কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে এই পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার৷ বর্তমান ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ‘ডিজিটাল আইডি’ চালু করা হবে৷ এই আইডি হবে যুক্তরাজ্যে কাজ করার অধিকারের প্রমাণ৷

মানবপাচারকারী চক্রের ব্যবসায়িক মডেল ভেঙে দেয়ার ক্ষেত্রে এই ডিজিটাল আইডিকে একটি হাতিয়ার হিসেবেই দেখছে সরকার৷ কারণ, এটি অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য কাজ পাওয়ার সুযোগ কঠিন করে তুলবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীরাও অবৈধভাবে শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারবে না৷ এছাড়া, ডিজিটাল আইডি নিয়োগকারীদের কাজকেও সহজ করবে৷ যেহেতু কাজের অধিকার প্রমাণে সবার জন্য ডিজিটাল আইডি বাধ্যতামূলক হবে, তাই কেউ আর যাচাই-বাছাই এড়িয়ে যেতে পারবে না বা জাল কাগজপত্র ব্যবহারও করতে পারবে না৷

অভিবাসন ইস্যুতে সরকারের কঠোর অবস্থানের সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মীরা৷ তারা বলছেন, এসব কারণে অভিবাসী এবং জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় ব্রিটিশদের মধ্যে বিদ্বেষ বাড়ছে৷

ডেলিভারু, জাস্ট ইট এবং উবার ইটস-সহ ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানগুলো চালক ও রাইডার নিয়োগে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপে সম্মত হয়েছে৷ কারণ, এসব খাতে সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করা না হলে অবৈধ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়ার শঙ্কা রয়েছে৷

চলতি বছরের জুলাইয়ে এই তিন কোম্পানির সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি করেছে সরকার৷ চুক্তি অনুযায়ী অবৈধভাবে কাজে যুক্ত হওয়া অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের শনাক্তে তথ্য ভাগাভাগি করবে প্রতিষ্ঠান তিনটি৷

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার