৫ ইসলামী ব্যাংক পাচ্ছে ছাড়, এখনই দিতে হচ্ছে না টাকা ফেরত
জাগো বাংলা প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১৩ পিএম
দেশের পাঁচটি সমস্যাগ্রস্ত ইসলামী ব্যাংকের তারল্য সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকার বিশেষ সহায়তা দিয়েছিল, তা এখনই ফেরত নিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একীভূতকরণের মাধ্যমে নতুন ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই অর্থ পুনরুদ্ধার স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি নীতিনির্ধারণী এক বৈঠকে এমন নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ সূত্র জানায়, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক—এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠন করা হবে, যার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’।
এরই মধ্যে এসব ব্যাংকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং একীভূতকরণের রূপরেখা তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, এখন অর্থ ফেরতের চাপ সৃষ্টি করলে পুরো একীভূতকরণ প্রক্রিয়া ঝুঁকিতে পড়বে। ফলে আপাতত মূল মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে ব্যাংকগুলোর সম্পদ ও দায়ের মূল্যায়ন, মূলধন কাঠামো নির্ধারণ এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দিকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৫ সালের মধ্যে তারল্য সংকটে থাকা এই ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন সময় রিফাইন্যান্স স্কিম, রেপো ও বিশেষ তহবিল থেকে মোট ৩৪ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়।
এর বেশির ভাগই ব্যবহৃত হয়েছে গ্রাহকদের আমানত ফেরত ও দৈনন্দিন পরিচালন ব্যয় মেটাতে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর ওপর প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ ও শাসনব্যবস্থার দুর্বলতাই এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এখন আমাদের লক্ষ্য টাকা ফেরত নয়, বরং ব্যাংকগুলোকে স্থিতিশীল করা। একীভূত ব্যাংক কার্যকরভাবে গঠিত হলে তখনই হিসাব মিলিয়ে অর্থ ফেরত নেওয়া হবে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, দুর্বল ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাবের নতুন অর্থ এলে তা ঋণ পরিশোধে সমন্বয় করা হতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে সেই নীতি শিথিল করা হয়েছে, যাতে ব্যাংকগুলো কিছুটা স্বস্তি পায় এবং পুনর্গঠনের কাজ নির্বিঘ্নে এগোয়।