Logo
Logo
×

অর্থনীতি

অস্থির স্বর্ণের বাজার

Icon

বিজনেস ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:০৮ এএম

অস্থির স্বর্ণের বাজার

বিশ্ববাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দরে বড় দরপতন হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সবচেয়ে ভালোমানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ভরিতে সাড়ে ১০ হাজার টাকা কমিয়েছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। আর তাতে এক ধাক্কায় ভরি নেমেছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮০৯ টাকায়। এর আগে দেশে কখনই একবারে সোনার দাম এতটা কমেনি। টানা কমছে মূল্যবান এই ধাতুর দর; দেশের বাজারে টানা তিনদিন (রোববার, সোম ও মঙ্গলবার) কমলো। এই তিনদিনে ভরিতে ১৫ হাজার ১৮৬ টাকা কমেছে; ছয় দিনের ব্যবধানে কমেছে ২৩ হাজার ৫৭২ টাকা। কিছুদিন আগে লাফিয়ে লাফিয়ে যে গতিতে বেড়েছিল, এখন সেই একই গতিতে নামছে সোনার দর।

এদিকে বুধবার রাতে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়িয়েছে বাজুস। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৮ হাজার ৯০০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ২ হাজার ৭০৯ টাকা হয়েছে।

রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০ অক্টোবর দেশের বাজারে ২২ ক্যারেট মানের সোনার ভরি ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকায় উঠেছিল। এর আগে কখনই সোনার দর অত উচ্চতায় উঠেনি।

দুইদিন পর ২২শে অক্টোবর এক ধাক্কায় এই মানের সোনার দর ভরিতে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমায় বাজুস; ভরি নামে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৫ টাকায়। ২৩ অক্টোবর থেকে এই দরে বিক্রি হয় সোনা।

তিনদিনের মাথায় চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার (২৬ অক্টোবর) এই সোনার দাম ভরিতে আরও এক হাজার ৩৮ টাকা কমানো হয়; ভরি নামে ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৮ টাকায়। সোমবার (২৭শে অক্টোবর) এই দরে বিক্রি হয়। ওইদিন রাতে আরও ৩ হাজার ৬৭৪ টাকা কমানো হয়; ভরি নামে ২ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ টাকায়। মঙ্গলবার (২৮শে অক্টোবর) সারা দেশে এই দরে বিক্রি হয়। 

২৪ ঘণ্টা না যেতেই আরেক দফা কমানো হয়। এ দফায় কমানো হয় ভরিতে ১০ হাজার ৪৭৪ টাকা। আর এতেই ভরি ২ লাখ টাকার নিচে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮০৯ টাকায় নেমেছে। অন্যান্য মানের সোনার দরও প্রায় একই হারে কমিয়েছে বাজুস। বুধবার থেকে নতুন দর কার্যকর। এ নিয়ে ছয়দিনের ব্যবধানে চার দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ২৩ হাজার ৫৭২ টাকা কমলো।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ানো হচ্ছিল। আগস্টের মাঝমাঝি সময় থেকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়া শুরু হয়। তার সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারেও দাম বাড়িয়ে চলে বাজুস। এই আড়াই মাসে দু-এক বার ছাড়া প্রতি বারই দাম বাড়ানো হয়।

বাজুসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে অস্থির ছিল দেশের সোনার বাজার। পুরো মাসে মোট ১২ বার দাম সমন্বয় করা হয়। এর মধ্যে ১০ বারই বাড়ানো হয়, কমে মাত্র দুইবার। সেপ্টেম্বর মাসে ২২ ক্যারেট মানের প্রতিভরি সোনার দাম বাড়ে ২১ হাজার ৬৬ টাকা। চলতি বছর (২০২৫ সাল) এখন পর্যন্ত মোট ৭০ বার সোনার দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। এর মধ্যে ৪৮ বার বেড়েছে, আর কমেছে ২২ বার। গত বছর (২০২৪ সাল) পুরো সময়ে দাম সমন্বয় হয়েছিল ৬২ বার।

বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন মূল্য অনুযায়ী ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে এক লাখ ৯৩ হাজার ৫০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৬৫ হাজার ৮৬২ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৩৭ হাজার ৮৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের রুপার ভরি চার হাজার ২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি চার হাজার ৪৭ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি তিন হাজার ৪৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম দুই হাজার ৬০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশ্ববাজারেও পতন: বিশ্ববাজারেও সোনার দরে পতন হয়েছে; রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে গত ২০শে অক্টোবর অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে প্রতি আউন্সের (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) দাম ৪ হাজার ৩৫০ ডলারে উঠেছিল। সপ্তাহ ধরে তা কমতে কমতে ৪ হাজার ডলারের নিচে নেমে এসেছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪১ ডলার ৪৩ সেন্ট কমে ৩ হাজার ৯৬৩ ডলার ৯৫ সেন্টে নেমেছে। শতাংশ হিসাবে কমেছে ১.০৩ শতাংশ। গত সোমবার বাজুস যখন দেশর বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দেয় তখন বিশ্বাবাজারে প্রতি আউন্স সোনার দর ছিল ৩ হাজার ৯৮৬ ডলার ৯০ সেন্ট।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: মহিউদ্দিন সরকার