পে-স্কেল নিয়ে অবশেষে স্বস্তির খবর এলো

জাগো বাংলা ডেস্ক প্রকাশিত: ০৭:২৮ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২
পে-স্কেল নিয়ে অবশেষে স্বস্তির খবর এলো

অবশেষে কাটল সরকারি চাকরিজীবীদের সকলের জন্য অভিন্ন পে-স্কেলের জটিলতা। সরকারি চাকরি আইন কার্যকরের জন্য তিন বছর আগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় আইনটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। আইনের জটিলতাগুলো সংশোধন করে সোমবার তা মন্ত্রিসভায় তোলা হয়।

এই সংশোধনীর মাধ্যমে স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বেতন এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধা নির্ধারণের বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।

আরো পড়ুন: নতুন পে-স্কেল নিয়ে যা হচ্ছে

এ সংশোধীনতে সরকারি চাকরিজীবীদের অভিন্ন পে স্কেলের জটিলতা কাটলো। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি চাকরি আইন প্রণয়নের আগে স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন-ভাতা সংক্রান্ত ১৯৭৫ সালের চাকরি (পুনর্গঠন ও শর্তাবলি) আইন বাতিল করা হয়।

এর আলোকেই সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য অভিন্ন পে স্কেল দেওয়া হয়। গত তিন বছর ধরে আইনটি না থাকায় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে অভিন্ন পে স্কেল না মানলেও আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। ফলে সরকারি চাকরি আইন কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়ার পরই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আইনটি সংশোধনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর আইনটি সংশোধনে উদ্যোগ নেয় জনপ্রশান মন্ত্রণালয়। আইনটি সংশোধনের লক্ষ্যে আন্ত মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ত্রুটিপূর্ণ ধারাগুলো সংশোধন করা হয়। এতে কাটল অভিন্ন পে স্কেলের জটিলতা।

কর্মচারী অবসরে গেলে তিনি যেসব সুবিধা প্রাপ্য হবেন, তা নির্ধারিত হওয়ার কথা এ আইনের ১৭ ধারায়। কিন্তু ১৭ ধারায় রয়েছে প্রশিক্ষণসংক্রান্ত বিষয়। অবসর গ্রহণকারী সরকারি কর্মচারীর পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫১ ধারা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। অথচ ৫১ ধারাটি হলো অবসর সুবিধা স্থগিত, প্রত্যাহার ইত্যাদি সংক্রান্ত। এসব বিষয়ও সংশোধন করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যমান আইনে স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য নয় বলা ছিল। এবার তা পরিবর্তন করে তাদেরও আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কারণ চাকরি, বেতন, বয়স, পে স্কেলসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধার বিষয়টি সবার জন্য একই রকম। এ ছাড়া ক্লারিক্যাল কিছু ভুল ছিল, সেটা সংশোধন করা হচ্ছে।

সাংবিধানিক অঙ্গীকার ‘সিভিল সার্ভিস আইন’ কোনো সরকার বাসস্তবায়ন করেনি। ২০০৩ সালে প্রথম আইনটির খসড়া করে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার। তখন খসড়া আইনটির নাম ছিল ‘সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট’। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০০৭ সালে প্রথম ইউএনডিপির সহায়তায় ‘সরকারি কর্মচারী অ্যাক্ট’ নামে খসড়া তৈরি করা হয়। কিন্তু ওই অ্যাক্টও আলোর মুখ দেখেনি। গেজেট জারির আগেও একবার নাম পরিবর্তন করা হয়। সর্বশেষ সরকারি কর্মচারী আইনের পরিবর্তে এর নাম দেওয়া হয় ‘সরকারি চাকরি আইন’।

এ আইন করার জন্য নেওয়া প্রকল্পটি ২০০৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলেছে। এতে মোট খরচ হয় প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। বেশির ভাগ অর্থই কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, সভা ও সেমিনারে খরচ করা হয়। কিন্তু বান্তবায়ন করতে গিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় তা আবার সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।